ধানের সরকারি দামে লোকসানের শঙ্কা
বোরো ধান কাটার মাঝেই সরকারিভাবে ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিকেজি ৩২ টাকা। আগামী ৭ মে থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হবে। তবে ধানের সরকারি মূল্যে খুশি নন সুনামগঞ্জের হাওরের কৃষককূল। তারা জানিয়েছেন, ধান উৎপাদনে সার-বীজ, ডিজেল ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ধানের সরকারি দামে চাষাবাদের খরচ পোষাবে না, লাভ হবে না। প্রতিকেজি ধানের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
অবশ্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘সারাদেশ থেকে ধানের দামের তালিকা যাওয়ার পর জাতীয় কমিটির মাধ্যমে আলোচনা করে কৃষকদের লাভ দিয়ে ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৩২ টাকা কেজি যৌক্তিক দাম। প্রতিকেজি ধানে কৃষকদের উৎপাদন খরচ ৩০ টাকা ৪৫ পয়সা। ১ টাকা ৫৫ পয়সা লাভ দিয়ে গত বছরের চেয়ে দুই টাকা বৃদ্ধি করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আগামী ৭ মে থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন- হাওর এলাকা প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে বেশি করে ধান ক্রয় করা হবে। সুনামগঞ্জের ৭ উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ও ৪ উপজেলায় কৃষি বিভাগের তালিকা অনুযায়ী প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে। একজন কৃষক খাদ্যগুদামে সর্বোচ্চ ৩ টন ধান বিক্রি করার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি ছোট-বড় হাওরে দুই লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন হয়েছে ভালো। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৭০ টন। সরকার নির্ধারিত ৩২ টাকা কেজিতে উৎপাদিত ধানের মূল্য দাঁড়াবে চার হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।
বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক স্বপন কুমার বর্মণ বলেন, ১ কেজি টেংরা ও বাইম মাছের দাম হাজার টাকা। আর এক মণ ধানও বিক্রি হয় সাড়ে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এক কেজি মাছ কিনতে হলে এক মণ ধান লাগে।’
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
তাহিরপুর উপজেলার পাটাবুকা গ্রামের কৃষক রিপচাঁন হাবিব বলেন, শাকসবজির চেয়ে ধানের উৎপাদন খরচ ও ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই ধানের দাম ৪৫-৫০ টাকা করা প্রয়োজন। তা হলে কৃষকরা গ্রামে ৩২ টাকা দরে বিক্রির সুযোগ পেত।’
হাওরের কৃষি ও কৃষকরক্ষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, কৃষকদের বাঁচাতে ধানের দাম বাড়াতে হবে। কারণ কৃষকরা ভালো থাকলে এবং কিছু লাভ হলে আগামীতে ফসল ফলাতে আগ্রহী হবেন।’
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম