বেড়েছে এসি-ফ্যানের ক্রেতা

রেজাউল রেজা
২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
বেড়েছে এসি-ফ্যানের ক্রেতা

দেশজুড়ে তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তির খোঁজে সবাই ছুটছেন ফ্যান, এসিসহ শীতলীকরণ যন্ত্রের দোকান ও শোরুমগুলোতে। এসব ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দামও বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন- ‘যত গরম তত দাম’। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি শোরুমগুলোতে দাম সেভাবে বাড়েনি। আর ক্রেতাদের আক্ষেপ চাহিদা থাকলেও দামে কুলিয়ে ওঠাতে পারছেন না তারা।

ইলেকট্রনিক্স প্রণ্যের অন্যতম বাজার রাজধানীর স্টেডিয়াম মার্কেট। গতকাল এ মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্রেতার নজর এখন সিলিং ও স্ট্যান্ড ফ্যানসহ চার্জার ফ্যানে। কেউ কেউ আবার এসেছেন এয়ারকন্ডিশনার (এসি) বা আধুনিক কুলারের সন্ধানে। দোকানিরাও জানান, ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চেয়ে ফ্যান আইটেমের চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে।

মার্কেটের খুচরা বিক্রেতা মো. শাহীন বলেন, গ্রীষ্মের মৌসুমে সাধারণ সময়ে সপ্তাহে যেখানে ৭০-৮০টি ফ্যান বিক্রি করতে কষ্ট হয়ে যেত, সেখানে এখন একদিনেই ৪০-৫০টি ফ্যান বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তবে দাম বাড়তি রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা জানালেন, ঈদের আগেই দাম বাড়তে শুরু করে। ঈদপরবর্তী বাজারে তা আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, ফ্যানের বাজারের অবস্থা এখন ‘যত গরম তত দাম’। বর্তমানে গরমের তীব্রতা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় চাহিদা কয়েক গুণ বেড়েছে। এখন দাম আরও বাড়ছে।

স্টেডিয়াম মার্কেটে গতকাল নিয়ে দুই দিন ফ্যানের সন্ধানে এসেছেন ওয়ারি এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ১২ ইঞ্চির স্ট্যান্ড ফ্যান সেদিন চাইল সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আজ তা ৫ হাজার চাইছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি ব্র্যান্ডের সিলিংফ্যান ১ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং বিদেশি সিলিংফ্যান ৪ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। টেবিল ফ্যান আকারভেদে ২০০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। বিদেশি ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে দাম আরও বেশি। লিটারভেদে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কুলার ১২ থেকে ১৫ হাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে পাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর নবাবপুরের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসায়ীরাও জানান, ফ্যানের চাহিদা ও দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন জানান, দেশি-বিদেশি সব ফ্যানের দামই এখন বাড়তি। একদিকে আমদানি কমেছে, আরেক দিকে যারা আমদানি করেছে তারাও পণ্য সংকট তৈরি করছে। উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় দেশি পণ্যের দামও বাড়তি। এমনকি দেশি ব্র্যান্ডগুলোর ফ্যানও অনেক দোকানে বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে অফিস, দোকানসহ বাসাবাড়িতে গরম থেকে রেহাই পেতে এসির বাজারেও ক্রেতা বেড়েছে। বাজারে দেশি-বিদেশি নানা মডেল, ক্ষমতা ও প্রযুক্তির এসি পাওয়া যাচ্ছে। মগবাজার এলাকর স্যামসাং শোরুমের একজন ক্রেতা মো. শাহ-নেওয়াজ বলেন, যে গরম তাতে কিছু টাকা ম্যানেজ করে এসি কিনব ভেবেছি। কিন্তু বাজেটে কুলাচ্ছে না। অনেক বেশি দাম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৪৫ থেকে ৪৬ হাজার টাকা (১ টনের নন-ইনভার্টার) থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে এসি পাওয়া যাচ্ছে। ইনভার্টার এসির ক্ষেত্রে খরচ আরও বেশি। সে ক্ষেত্রে এক টনের এসির পেছনে খরচ পড়বে ৫০ হাজার টাকার ওপরে। প্রযুক্তিভেদে দাম আরও বেশি। মার্কেটের একেক দোকানে একেক দাম হলেও শোরুমগুলোতে দাম বাড়েনি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন সোহেল কিবরিয়া বলেন, গরম বাড়ায় বাজারে সম্প্রতি এসির চাহিদা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় গত মৌসুমের চেয়ে এবার দাম সামান্য বাড়তি। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি। সামর্থ্যরে মধ্যে যাতে ক্রেতারা এসি কিনতে পারছেন। এর সঙ্গে তারা পাচ্ছেন আধুনিক প্রযুক্তিও।

এদিকে গরমের তীব্রতার মাঝে লোডশেডিং বাড়ায় আইপিএসের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে। বাজারে তিনটি ফ্যান ও পাঁচটি লাইট চলবে এমন সক্ষমতার আইপিএসের দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকার মধ্যে। ব্র্যান্ডভেদে দাম এর বেশিও রয়েছে।