স্বপ্ন যাবে বাড়ি

তাওহীদুল ইসলাম
০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
স্বপ্ন যাবে বাড়ি

সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নাড়ির টানে বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ। আনন্দমুখর এ সম্মিলনে শামিল হতে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব শ্রেণিপেশার মানুষের গ্রামমুখী স্রোত বইছে তিন-চার দিন ধরে; চলবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত। কর্মসূত্রে যে যেখানেই অবস্থান করুক, ঈদে বাড়ি ফেরার অদম্য আকাক্সক্ষা সবার মনকেই আলোড়িত করে তোলে। সামাজিক পরিবর্তন ও নগরায়ণের ফলে যৌথ পরিবার প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বেশিরভাগ মানুষ এখন কর্মস্থলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। গ্রামের পৈতৃক ভিটা সারাবছর অনেকটা খালিই পড়ে থাকে। ঈদের ছুটিতে এই খালি ভিটায় প্রাণের সঞ্চার হয়। তাই বলা হয় স্বপ্ন যাবে বাড়ি। 

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১১ এপ্রিল ঈদ হতে পারে। রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এখন তাই গ্রামমুখী যাত্রীর ভিড়। ভিড় কমলাপুর রেলস্টেশনে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও। 

গতকাল দেশের প্রধান ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে ঈদযাত্রা পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী। তিনি বলেছেন, পশ্চিমাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলের ট্রেন সমন্বয় করার জন্য পশ্চিমাঞ্চলের কর্মকর্তাদের আমরা ঢাকায় নিয়ে এসেছি। কিছু বিলম্ব থাকতে পারে। কিন্তু খুব বেশি বিলম্ব হবে এটা আশা করছি না। বিলম্বগুলো সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য চেষ্টা করব। তিনি আরও বলেন, ট্রেন বিলম্ব হবে এটা আমরা ধরে নিয়েছি। যখন ট্রেনটা ছাড়ে তখন একরকম থাকে, তারপরে যাত্রীর চাপ বাড়ে, পথে নানা ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে কিছুটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে আবার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সবকিছু বিবেচনা করে ট্রেন চলাচলে কিছুটা বিলম্ব হবে এটা আমরা ধরেই নিই। যখন একটি ট্রেন বিলম্ব হয়; ধরে নিন একতা এক্সপ্রেস এখন দেরিতে ছেড়েছে। কিন্তু আমাদের একটা স্পেয়ার রেক পঞ্চগড়ে আছে। তখন আমরা সেই কোচ দিয়ে ওইখান থেকে সঠিক সময়ে ট্রেনটা আবার ছেড়ে দিই। ফলে আমরা কিছুটা বিলম্ব নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।

এদিকে গতকাল শনিবার গাবতলী বাস টার্মিনালের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, ঈদের সময় কিছু আনফিট গাড়ি রাস্তায় নেমে আসে, এমন একটি কমন অভিযোগ থাকে প্রতিবছরই। এবার কোনোভাবেই যাতে আনফিট গাড়ি রাস্তায় নামতে না পারে, এজন্য আমরা বিআরটিসির ৫৫০টি বাস রিজার্ভেশনে রেখেছি। এছাড়া গার্মেন্টস মালিকদের রিকুইজিশন দিতে বলেছি, যাতে আনফিট গাড়ি না নিয়ে বিআরটিসির বাস নিতে পারে। সুতরাং এখানে আনফিট গাড়ি রাস্তায় নামার সুযোগ নেই। এছাড়া যেসব জায়গা থেকে আনফিট গাড়ি বের হওয়ার চেষ্টা করে সেগুলো বন্ধ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘টার্মিনালগুলো পরিদর্শন করেছি। গাবতলী বাস টার্মিনালে আমাদের মোবাইল কোর্ট, ভিজিলেন্স টিম, মনিটরিং টিম কাজ করছে। বিভিন্ন টিকিট কাউন্টার ঘুরে দেখলাম, বেশিরভাগ জায়গায় ভাড়া কম নেওয়া হচ্ছে। দুই-এক জায়গায় রুট ভুল লিখেছে। তাই ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করতে বলেছি। এখানে যাত্রীরও তেমন ভিড় নেই, পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়ারও অভিযোগ দেখছি না।’

বিআরটিএর পক্ষ থেকে প্রতিটি কাউন্টারে ভাড়ার তালিকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট, ভিজিলেন্স টিম সদস্য দেখছেন। মালিক সমিতির নেতারাও এই ব্যাপারে সিরিয়াস, যাতে তাদের বদনাম না হয়।’

গতকাল ৫৮টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে এবং সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে ৭৫টি লঞ্চ। অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের আহ্বায়ক ও এমভি ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুন আল রশিদ বলেন, ঈদের ৩ থেকে ৪ দিন আগে থেকে টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে এবার টার্মিনালে ভিন্ন চিত্র।