ভূ-রাজনীতিতে নজর ও কঠোর ব্যবস্থা দরকার
বান্দরবানে তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় পার্বত্য এলাকার পর্যবেক্ষক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব) এমদাদুল ইসলাম বলেছেন, কুকিদের বিরুদ্ধে কঠোর ও যৌথ অভিযান চালাতে হবে। এমন শাস্তি দিতে হবে, যার দৃষ্টান্ত দেখে আর কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না করে। গতকাল রাতে আমাদের সময়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এমদাদুল ইসলাম বলেন, আজকে অ্যাকশনে না গেলে পরশু আরেকটি ডাকাত দল বের হবে। তারা ভাববে- সারাদিন কষ্ট করার কী আছে।
চলো আরেকটি ব্যাংক লুট করি। ওখানে আর কোনো ব্যাংকই থাকবে না। এটি যদি সিভিয়ার অ্যাকশনে না যায়, তা হলে পরশু আলিকদম তার পর রাঙামাটি- এভাবে লুটপাট চলতে থাকবে। তিনি বলেন, ব্যাংক হচ্ছে- মানুষের বিশ্বাসের জায়গা। আমরা কী এত আত্মতুষ্টিতে ভুগব যে, আমাদের ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে আর আমরা বসে থাকব।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কুকিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার বিষয়ে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ডাকাতির ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে- কুকি চিন শান্তি চায় না। সমঝোতায় গেলে তাদের চাঁদাবাজি করা মুশকিল হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত বাইরের কোনো ইন্ধন থাকতে পারে। মনিপুর ও মিজোরামে কুকিদের মতো আমাদের কুকিরাও একই লাইনে আছে। কোনো স্বার্থান্বেষী মহল পেছন থেকে ইন্ধন জোগাতে পারে। যার ফলে সমঝোতা শান্তিতে না এসে এখন তারা সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সংযোগ সড়ক হচ্ছে, সেখানে মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। এখন মানুষের মধ্যে যদি শঙ্কা আর ভয় সৃষ্টি করে রাখা যায়, তা হলে এই অঞ্চলে তারা লুটেপুটে খেতে পারবে।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিষয়ে এই পর্যবেক্ষক বলেন, রাত ৯টার সময় ব্যাংক খোলা থাকবে কেন। আর মসজিদের মধ্যে ম্যানেজারের কাছে চাবি থাকবে কেন। চাবি তো তিনি আরেক জায়গায় জমা রাখার কথা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কথা হলো- এই যে দেড়-দুই ঘণ্টা ধরে ডাকাতি করতেছে। পকেটে পকেটে মোবাইল, একটা লোকও কি বাজার থেকে একটা ফোন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যোগাযোগ করতে পারেনি? সেনাবাহিনীর সব সময় স্টাইকিং একটা পেট্রল টিম রেডি থাকে। সেটি হলে তারা ৫-৭ মিনিটের মধ্যে ওখানে এসে হাজির হতে পারে। তিনি বলেন, কালকে ঘটনা ঘটলেও আজকে অ্যালার্টনেস নেই। আজকে দুপুরে আবার লুট করল। সবাই লম্বা লম্বা বক্তৃতা দিচ্ছে। বলতেছে আইনশৃঙ্খলা সব ঠিক আছে। মঙ্গলবার যখন এই কা- করছে, সঙ্গে সঙ্গে ফলোআপ করা উচিত ছিল।
মেজর (অব) ইমদাদুল ইসলাম বলেন, মূল বিষয়টি হচ্ছে- আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি। আমি একটা হিসাবে দেখেছি- বিভিন্ন গ্রুপ মিলে চাঁদাবাজি করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে অনেক সময় বিভিন্ন মহল থেকে একটা বাফার জোন হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে ভূ-রাজনৈতিক কারণে এই এলাকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বিভিন্ন মহল, বিভিন্ন দেশ সহায়তা করেছে। আমাদের সেই পুরো বিষয়টির ওপর নজর দিতে হবে।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন