নিশাঙ্কা-আসালঙ্কার ব্যাটে বাংলাদেশকে ভালোই জবাব দিচ্ছে শ্রীলংকা
বাংলাদেশের লক্ষ্য এই ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিত করা। শ্রীলংকার লক্ষ্য এই ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনা। এমন ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২৮৬ রানের বড় সংগ্রহ তুলেছে বাংলাদেশ। বিশাল এই রান তাড়ায় শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি শ্রীলংকার। শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদের তোপে পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল শ্রীলংকা। তবে পাথুম নিশাঙ্কা ও চারিথ আসলঙ্কার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। এরই মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুইজন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৮ ওভার শেষে শ্রীলংকার রান ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৫। উইকেটে ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার (৭৩*) সঙ্গে আছেন চারিথ আসালঙ্কা (৬৬*)। জয়ের জন্য এখনো লংকানদের দরকার ১৩১ বলে ১২২। দুজনের জুটিতে এখনো পর্যন্ত এসেছে ১২২ রান।
২৮৭ রানের লক্ষ্যে এদিন শুরুতেই বিপদে পড়ে লংকানরা। আবিষ্কা ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন শরিফুল ইসলাম। প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে ফিরেছেন তিনি। এরপর পাথুম নিশাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস মিলে ঝড় শুরু করার ইঙ্গিত দিলেও বোলিংয়ে এসেই সেটি থামান তাসকিন আহমেদ। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ৪২ রানের মাথায় মেন্ডিসকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলে আবারও শরিফুলের উইকেট, এবার শিকার সাদিরা সামারাবিক্রামা। মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তিনি। এরপর আসালঙ্কাকে নিয়ে জুটি বাঁধেন নিশাঙ্কা।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান করে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় ম্যাচটি শুরু হয়। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই উইকেট হারায়। দিলশান মাদুশানকার বলে শটে থাকা দুনিথ ওয়েলালাগের কাছে শূন্য রানে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। তবে শুরুর বিপদ কাটিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে হাল ধরে টাইগাররা। দলীয় অষ্টম ওভারে অর্ধশতকের দেখা পায়। তবে দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েও অর্ধশতকের দেখা পাননি আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শান্ত। ১৩তম ওভারে দলীয় ৭৫ রানের মাথায় দিলশান মাদুশানকার বলে উইকেটরক্ষক কুসল মেন্ডিসকে ক্যাচ দেন তিনি। বাংলাদেশ অধিনায়ক ৩৯ বলে ৬টি চারে ৪০ রান করেন।
শান্তর বিদায়ের পর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে চমৎকার জুটি গড়েন সৌম্য। তৃতীয় উইকেটে আসে ৫৫ রানের জুটি। দলীয় ১৩০ রানে ব্যক্তিগত ৬৮ রান করে বিদায় নেন সৌম্য। হাসারাঙ্গার বলে মাদুশঙ্কার বলে ক্যাচ দেন ৬৬ বলে ৬৮ করা এই বাঁহাতি ব্যাটার। দুই বল যেতে আবারও হাসারাঙ্গার আঘাত। গুগলি বল বুঝতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সামনে এগিয়ে খেলতে চাইলেও বল তাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় উইকেটকিপার কুশল মেন্ডিসের হাতে। গ্লাভস স্টাম্পে ছোঁয়াতে কোনো ভুল করেননি মেন্ডিস।
দ্রুত ২ উইকেট হারালেও মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান হৃদয়। পঞ্চম উইকেটে এই দুজনের জুটি থেকে ৪৩ রান আসে। প্রথমে রয়েসয়ে খেললেও হাত খুলতে শুরু করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে ১৭৩ রানের মাথায় হাসারাঙ্গার বলে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হন তিনি। সেখানেই ক্ষান্ত যাননি হাসরাঙ্গা। দলের সঙ্গে আর ১৬ রান যোগ হতে মেহেদী হাসান মিরাজকে সরাসরি বোল্ড করেন তিনি। আগের ম্যাচে উইকেটশূন্য এই লেগ স্পিনার ৪ উইকেট তুলে নিয়ে কঠিন বিপদে ফেলেন বাংলাদেশকে।
১৮৯ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরে হৃদয় ও তানজিম হাসান সাকিবের জুটিতে। সপ্তম উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। ২৩৬ রানের মাথায় ফেরেন সাকিব (১৮)। নয়ে নেমে তাসকিনও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। আর হৃদয় তো আছেনই। এর মধ্যে হাসারাঙ্গার ওভারেই দুইটি ছক্কা মারেন হৃদয়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানে থামে বাংলাদেশ। ১০২ বলে ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। মাত্র ৩টি চারের বিপরীতে মারেন ৫টি ছক্কা। আরেক পাশে ১০ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন আহমেদ।