বেশির ভাগ টাকা পাচার ব্যবসায়িক চ্যানেলে : গভর্নর আব্দুর রউফ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
বেশির ভাগ টাকা পাচার ব্যবসায়িক চ্যানেলে : গভর্নর আব্দুর রউফ

দেশ থেকে বেশির ভাগ টাকা ব্যবসায়িক চ্যানেলে পাচার হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেছেন, ওভার ইনভয়েসিং বা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে টাকাগুলো পাচার হয়ে যায়। তবে ‘ওভার ইনভয়েসিংয়ের’ মাধ্যমে টাকা পাচার ৯০ শতাংশ রোধ করা গেছে বলে দাবি করেন গভর্নর।

গতকাল সোমবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তাদের ‘স্মার্ট ইনভেস্টিগেশন মডেল ফর সিআইডি অফিসারস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন গভর্নর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গভর্নর আরও বলেন, ধরেন একটা পণ্যের দাম ১০০ ডলার, সেটার জন্য কেউ দেড়শো ডলারের এলসি করল। বাকি ৫০ ডলার পাচার হয়ে গেল। আবার যারা রপ্তানিকারক, তারাও কিন্তু রপ্তানির টাকা দেশে না নিয়ে এসে সেখানে রেখে দেন। এটাও মানি লন্ডারিং।

২০২২ সালের শেষে মানি এক্সচেঞ্জগুলো ডলারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে সংকট তৈরি করেছিল বলে জানান রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, অবশ্য মানি এক্সচেঞ্জরা যে ডলার খুচরা ট্রেড করে, এটা খুব ইমপরট্যান্ট না। সারা বছর তারা ৪৫ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার কেনাবেচা করে। আর আমাদের ব্যাংকিং সিস্টেমে টোটাল ট্রানজেকশন হয় ২৭০ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং সিস্টেমের কাছে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসা কিছুই না। কিন্তু এটার একটা নুইসেন্স ভ্যালু আছে। যখন তারা ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়, তখন আমাদের প্রবাসীরা বেশি দাম পাওয়ার কথা চিন্তা করে ডলার ধরে রাখে। সে জন্য মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে থামানোর দরকার ছিল। সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংক, সিআইডি, এনএসআই একসঙ্গে কাজ করে এটাকে কিন্তু আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।

অর্থ পাচার প্রতিরোধে হুন্ডি বন্ধের ওপর জোর দিয়ে গভর্নর বলেন, প্রবাসী ভাইয়েরা অনেক সময় বেশি টাকা পাঠানোর জন্য কাউকে হয়তো ৫০০ ডলার দিলেন। তিনি ওই ৫০০ ডলার রেখে দেশে তার আত্মীয়কে এখান থেকে টাকা দিয়ে দিলেন। এ রকম সন্দেহজনক হুন্ডির ১০০ থেকে ২০০ অ্যাকাউন্ট আমরা প্রতিদিন বন্ধ করে দিচ্ছি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, আগে শুধু মাদক ব্যবহারকারী ও পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন মাদকের গডফাদারদের গ্রেপ্তার করার ধারা চালু করেছে সিআইডি। তাদের সম্পত্তি ক্রোক করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ২০২৭ সাল নাগাদ ৭০ শতাংশ ক্যাশলেস লেনদেনের দিকে যাচ্ছে দেশ। সেক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধ দমনে সিআইডির কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।