অসহযোগ আন্দোলনে ভিত নড়ে যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
অসহযোগ আন্দোলনে ভিত নড়ে যায়

১৯৭১ সালের ১১ মার্চের এই দিনে অসহযোগ আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তানের ভিত নড়ে যায়। সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারের সঙ্গে সব ধরনের অসহযোগিতা অব্যাহত রাখে। হাইকোর্টের বিচারক এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সারা বাংলার সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের কর্মচারীরা অফিস বর্জন করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুকে তারবার্তা পাঠান। ওই তারবার্তায় গত কয়েক দিনের নিপীড়ন-নির্যাতনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সমঝোতার প্রস্তাব দেন।

কিন্তু ভুট্টোর কথা তোয়াক্কা না করে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো সকাল থেকে স্বতঃস্ফূর্ত হাজার হাজার বাঙালি মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে। সবার চোখে-মুখে একই জিজ্ঞাসা, বঙ্গবন্ধু কোথায়? তিনি কি কিছু বলেছেন? তার পরবর্তী নির্দেশ কী?

অন্যদিকে এই দিনেও আগের মতোই বিমানে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সেনা আসতে থাকে পূর্ব পাকিস্তানে। ফিরতি বিমানে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরত যেতে থাকে পাকিস্তানি সেনা ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা।

একাত্তরের এই দিনে বরিশাল কারাগার থেকে ৪০ কয়েদি পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দুজন নিহত ও ২০ জন আহত হন। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর খলিফাখ্যাত চার নেতা আ স ম আবদুর রব, নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ ও আবদুল কুদ্দুস মাখন এক যুক্ত বিবৃতিতে সংকট নিরসনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

এই দিন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ন্যাপ নেতা অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমদ ও আতাউর রহমান খান। আতাউর রহমান খান এক বিবৃতিতে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যদিকে পাকিস্তানের ব্যবসায়ী সমাজ এক বিবৃতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখার স্বার্থে সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানায়।

করাচিতে গণঐক্য আন্দোলনের নেতা এয়ার মার্শাল (অব) আসগর খান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে অবিলম্বে ক্ষমতা ছাড়া না হলে দেশের দুই অংশকে এক রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।