বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে সয়াবিন তেল

আশাহত ভোক্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে সয়াবিন তেল

রমজান সামনে রেখে নিত্যপণ্য সয়াবিন তেলের দাম কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল ব্যবসায়ীরা। গতকাল ১ মার্চ থেকে নতুন দরে সয়াবিন তেল বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে পণ্যটি পুরনো দামেই বিক্রি হয়েছে। সর্বশেষ দাম কমানোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে গিয়ে ভোক্তাদের হতাশ হতে হয়েছে। কারণ এখনো আগের দাম ১৭৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্যটি। ফলে প্রতি লিটারে ১০ টাকা সাশ্রয়ের বদলে ভোক্তাদের এখনো বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনাবিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। সভায় আরও জানানো হয়, ১ মার্চ থেকে সয়াবিন তেলের নতুন এই দর কার্যকর হবে। পরে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই তারিখ থেকে দাম কমানোর কথা জানায়। কিন্তু রাজধানীর

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল দাম কমানোর সিদ্ধান্তের কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, কোম্পানি থেকে কম দামে তেল সরবরাহ করা হয়নি। অনেকে আবার বলছেন, কোম্পানির ডিলাররা বলছেন- আরও সময় লাগবে। রাজধানীর কদমতলী সাদ্দাম মার্কেট বাজারের সততা জেনারেল স্টোরের মো. শাজাহান মিয়া ও মিলন স্টোরের মো. মিলন হোসেনসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা জানান, কম দামের বোতল এখনো আসেনি। তাই আগের এমআরপি ১৭৩ টাকার বোতলই বিক্রি হচ্ছে। ডিলাররা বলেছেন, আগের দামে পুরনো বোতল শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন দামের বোতল মিলবে না। নতুন কম দামের বোতল পেতে আরও ১০-১২ দিন সময় লাগবে।

ঢাকা জেনারেল স্টোরের মো. মোজাহিদসহ কারওয়ানবাজারের কিচেন মার্কেটের অন্য ব্যবসায়ীরাও জানান, ডিলাররা ১০ টাকা কমের তেল সরবরাহ করেনি। আমরা তো আর কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি নেই না, ডিলারের মাধ্যমে পাই। ডিলাররা না দিলে আমরা কীভাবে পাব। শুক্র-শনিবার হওয়ায় হয়তো দেরি হচ্ছে। আমরা এখনো যে তেল বিক্রি করছি, এগুলো আগের দামেই কেনা।

কম দামে না পেয়ে আক্ষেপ করে কদমতলী এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. কৌশিক আহমেদ বলেন, খবরে জানতে পারলাম আজ (শুক্রবার) থেকে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। কিন্তু বাজারে এসে দেখছি কিছুই বদলায়নি। এটা হতাশাজনক।

বাসাবো এলাকার বাসিন্দা মো. এনামুল হক বলেন, দাম কমার বেলায় বলা হয়, আগের তেল শেষ হয়নি। আরও সময় লাগবে। অথচ বাড়ানোর বেলায় এক রাতের মধ্যেই বেড়ে যায়। তখন আর বিক্রেতারা বলেন না যে আগের তেল রয়ে গেছে, কম দামে নেন।

অথচ গত ২০ ফেব্রুয়ারির টাস্কফোর্সের সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, সরকার পাঁচ টাকা ছাড় দিয়েছে। এখন রমজান সামনে রেখে আপনারা নিজেরাও পাঁচ টাকা ছাড় দেন। সভায় উপস্থিত মিল মালিক ও তেল পরিশোধনকারীরা তা মেনে নিলে নতুন দাম নির্ধারিত হয়। ১ মার্চ থেকে এর সুফল পাওয়ার কথা থাকলেও বাজারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বোতলজাত ও খোলা দুই ধরনের সয়াবিন তেলই আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে চার নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব পণ্য হলো চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক কমানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।