বিদেশি ঋণের অর্থছাড় দ্রুত ও সহজ করায় নজর
দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসনে নানামুখী কৌশল নিয়ে কাজ করছে সরকার। বিশেষ করে রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি সেবার মান বাড়াতেও নজর দিয়েছে। এ ছাড়াও চলমান ডলার সংকট কাটাতে বিদেশি ঋণ ও অনুদান ছাড়ে জোর দিচ্ছে সরকার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়েও আগাম তদ্বির শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে চলমান ঋণ প্রকল্পগুলোয় প্রতিশ্রুতির অর্থ ছাড় প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করার অনুরোধ রয়েছে সরকারের।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল সচিবালয়ে জানিয়েছেন, সমস্যা উত্তরণের চেষ্টা চলছে। বিনিময় মূল্য কীভাবে স্থিতিশীল করা যায়, সেটি নিয়েও কাজ চলছে। আমাদের ডলারেরই সংকট। সংকটগুলো দ্রুত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। আমাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছে।
এদিকে আগামী এপ্রিলের শেষদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিনিধি দলটির সফরসূচি এগিয়ে আনার বিষয়েও ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা করে সংস্থার প্রধানকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থবিভাগের একটি সূত্র।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে গত মাসে পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কমিশনের এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে বিদেশি ঋণ ও অনুদান ছাড় প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করতে চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে-চাপের মধ্যে থাকা অর্থনীতি চাঙা করার পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পে গতি আনা হবে। একই সঙ্গে দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা ডলার-সংকট সামাল দিতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ঋণের অর্থছাড় দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) আহসান নির্বাহী পরিচালক এইচ মনসুর আমাদের সময়কে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষপটে এটি ঠিকই আছে। কারণ ডলার ছাড়া চলবে না। যতদূর পারে তারা তা সংগ্রহ করবে। তবে নীতি ঠিক না করে ডলার এলেও তা থাকবে না। এজন্য নীতির সংস্কার করতে হবে।
সূত্র জানায়, উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে ও অর্থছাড় প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে ওই সভায় যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতে এবং অর্থ ছাড় করতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি প্রতি দুই মাসে অন্তত একটি সভা করবে। কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সদস্য থাকবেন। সভার অগ্রগতি সময় সময় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। এতে করে একদিকে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হবে। অন্যদিকে ঋণ ও অনুদানের অর্থছাড়ে গতি ফিরবে, যা ডলার সংকট কাটাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে অর্থনৈতিক কূটনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। ‘কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতিতে সম্পর্ক এগিয়ে যাবেÑ এমন মনোভাব নিয়ে সবার সঙ্গে কাজ করার নির্শেনা দেওয়া হয়েছে পরিকল্পানা কমিশনকে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে পররাষ্ট্র, অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিদেশ সফর শুরু করেছেন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ডলার-সংকট সামাল দিতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ঋণের অর্থছাড় দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া অন্যান্য বৈশ্বিক সংস্থা বা জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা, ডব্লিউএইচও, ডব্লিউটিও, এফএও, ইউএনএইচসিআরসহ সব সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, অর্থনীতির অন্যান্য সূচক (রপ্তানি, রেমিট্যান্স) ভালো না হলে সহসা ডলার সংকট কাটবে না। মূলত দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়ার উন্নয়নb mn‡hvMx‡`i g‡a¨ Av¯’vi msKU ˆZwi n‡q‡Q| †mwU †givg‡Z KvR KiviI civgk© †`b wZwb|