‘অলস’ ফেরির কারণে পকেট কাটে ট্রলার-স্পিডবোট

সোহেল রানা, রাজবাড়ী
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
‘অলস’ ফেরির কারণে পকেট কাটে ট্রলার-স্পিডবোট

পাবনা ও রাজবাড়ীর মধ্যকার নাজিরগঞ্জ-ধাওয়াপাড়া (জৌকুড়া) নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হলেও যাত্রীদের ভোগান্তি খুব একটা কমেনি। এ পথে চলাচল করা দুটি ফেরির একটি অলস পড়ে থাকে; আরেকটি যাতায়াত করলেও সব সময় মেলে না। এ সুযোগে সেখানে সাধারণ যাত্রীদের পকেট কাটছেন ট্রলার ও স্পিডবোটের মালিকরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) উদ্যোগে গত ১৪ নভেম্বর রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জের মধ্যে ফেরি চলাচল শুরু হয়। গতকাল দুপুর ২টার দিকে জৌকুড়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো ফেরি নেই। কয়েকটি ট্রাক, মাইক্রো ও প্রাইভেটকার নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে ফেরি না পেয়ে ট্রলার ও স্পিডবোটে যাতায়াত করছেন মোটরসাইকেলচালক ও সাধারণ যাত্রীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই নৌপথে দুটি ফেরি চলাচলের কথা। কিন্তু একটি সব সময় অলস পড়ে থাকে। অন্যটি ২৪ ঘণ্টা চলার কথা থাকলেও চলে না। রাজবাড়ীর জৌকুড়া থেকে সকাল ৯টা, দুপুর সাড়ে ১২টা ও রাত ১০টায় ফেরিটি ছেড়ে যায়।

ফেরি কম থাকার কারণে ট্রলার নামিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান শরীফ। তার একেকটি ট্রলারে যাত্রীপ্রতি ৭০ টাকা নেওয়া হয়। মোটরসাইকেলের জন্য দিতে হয় ১২০ টাকা।

সবুজ মোল্যা নামে আরেক ব্যক্তির নেতৃত্বে চলে ২৪টি স্পিডবোট; যাত্রীপ্রতি ভাড়া ১২০ টাকা। ফেরিতে যাত্রী পারাপারে নেওয়া হয় ৩০ টাকা।

মোস্তাফিজুর রহমান শরীফের ট্রলারঘাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এক প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করে বলেন, তারা এখানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লিজ নিয়ে ট্রলার চালাচ্ছেন।

স্পিডবোট পরিচালনাকারী মামুন মিয়া বলেন, বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নিয়ে স্পিডবোট পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের ২৪টি স্পিডবোট রয়েছে।

ট্রাকচালক আব্দুল আলিম বলেন, ‘ঘাটে আসতে ১টা বাজে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেও ফেরি মেলেনি। কোনো টার্মিনাল না থাকায় ঘাটে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু টার্মিনাল চার্জ ঠিকই দিতে হয়।

প্রাইভেটকারচালক সুমন হোসেন বলেন, ‘দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কখন ফেরি আসবে জানি না। ঘাটের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। ফেরি সার্ভিস চালু হলেও ভোগান্তি দূর হয়নি।’

ট্রলারে পার হওয়া রাহেলা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘সরকার দুটি ফেরি চালু করলেও আমাদের যাতায়াতে কাজে আসেনি। আগেও ট্রলারে পার হয়েছি, এখনো ট্রলারে পার হচ্ছি।’

চন্দনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রব বলেন, ‘এ ঘাটে হয়রানির পাশাপাশি যাত্রীদের পকেট কাটা হয়। কোনো টার্মিনাল না থাকলেও চার্জ দিতে হয়।’

বিআইডব্লিউটিসি নাজিরগঞ্জ-ধাওয়াপারা রুটের ম্যানেজার মোহা. মহিউদ্দিন রাসেল বলেন, ঘাটের সব অনিয়ম খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত কয়েক দিনে পদ্মায় নাব্যসংকটে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ইতোমধ্যে নাজিরগঞ্জ-ধাওয়াপারা রুটে ড্রেজিং শুরু হয়েছে।