সীমান্তে গোলাগুলি থামেনি, কমেছে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাত থামেনি; কিছুটা কমেছে। গতকাল রবিবার কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকা অন্যান্য দিনের তুলনায় শান্ত থাকলেও থেমে থেমে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন স্থানীয়রা। বন্ধ হয়নি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাও।
টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, গতকাল সকালে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। শব্দ বেশি শোনা গেছে হোয়াইক্যং, কানজরপাড়া ও খারাংখালী এলাকায়।
হোয়াইক্যং সীমান্তের বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, শনিবার রাতে আমাদের সীমান্তে দুই ঘণ্টা থেমে থেমে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।
শাহ পরীর দ্বীপ সীমান্তের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, ‘শনিবার রাতে গোলার শব্দ পাওয়া যায়নি। পরের দিন সকাল থেকেই গোলার আওয়াজ পাওয়া যায়। গোলার শব্দে শিশুরা বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তের ওপারে কাদিরবিল, নরবনিয়া, নয়াপাড়া, নুরুল্লাপাড়া, বাগগুনা, পংদা ও পাতনজা এলাকায় যুদ্ধ চলছে। এসব এলাকার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।
শাহ পরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ (৪৮) বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে গতকালও ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।’
টেকনাফ শাহ পরীর দ্বীপ ৯ নম্বর ওর্য়াডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে এখনো গোলাগুলি বন্ধ হয়নি। গত শনিবার গুলিবিদ্ধ নারীসহ পাঁচ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জলসীমানায় ঢুকে পড়েছিল।’
এ বিষয়ে কোস্টগার্ড চট্টগ্রাম (পূর্বাঞ্চল) জানায়, অনুপ্রবেশ রোধে নাফ নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে। ২৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটকে দেওয়া হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে প্রায় সময় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সীমান্তে নাফ নদ থাকার কারণে আমরা অনেকটা ‘সেফ জোনে’ আছি। তবু আমরা সীমান্তের বসবাসকারীদের সতর্ক থাকতে বলেছি।
টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপের জেটি দিয়ে আসা পাঁচ রোহিঙ্গাকে বিজিবি মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল সকালে জেটি ঘাট থেকেই তাদের ফেরত পাঠানো হয় বলে স্থানীয়রা জানান। তবে বিজিবি কিছু জানায়নি।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন
শাহ পরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘শনিবার বিকালে নৌকাযোগে টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে পাঁচ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের নাফ নদেই আটকে রাখেন বিজিবি সদস্যরা। পাঁচ রোহিঙ্গার মধ্যে এক নারী ছিলেন গুলিবিদ্ধ। সকালে (গতকাল) তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছি।’
এদিকে সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত গতকাল তুলনামূলক শান্ত ছিল।