পিডিবির কাছে পাওনা ১৮০০ কোটি টাকা

লুৎফর রহমান কাকন
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
পিডিবির কাছে পাওনা ১৮০০ কোটি টাকা

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৮শ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন শুরুর পর গত সাড়ে তিন মাসে এ অর্থ বকেয়া পড়েছে।

১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অবস্থান চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গ-ামারায়। খরচ হয়েছে প্রায় ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার। বিদ্যুৎকেন্দ্রে এস. আলম গ্রুপের অংশীদারত্বের পরিমাণ ৭০ শতাংশ। বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানায় রয়েছে চীনা কোম্পানি সেপকো থ্রি ও এইচটিজি।

গত রবিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঘুরে দেখা যায়, ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়তন ৬০৬ একর। এখান থেকে ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হচ্ছে। সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারছে না। অবশ্য বর্তমানে চাহিদা কম থাকায় একটি ইউনিট উৎপাদনে রয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালক এসএম আলমগীর কবীর বলেন, ‘আগামী এপ্রিলের মধ্যে পিজিসিবি (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ) সাবস্টেশনের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। তা ছাড়া তখন গরমের কারণে দেশে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে যাবে। ফলে তখন চাহিদা অনুযায়ী দুটি কেন্দ্র থেকেই উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হবে।’

গত বছরের ১৪ জানুয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম ইউনিট এবং ২৬ অক্টোবর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ কেনার কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি পিডিবি। ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ ১৮০০ কোটি টাকার বিল জমা দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাসের বিল হিসাব করলে এর সঙ্গে আরও ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা যোগ হবে। আর কেন্দ্রটি পুরোমাত্রায় উৎপাদনে গেলে প্রতি মাসে বিল ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা। ডলার সংকটের কারণে পিডিবি বকেয়া বিল শোধ করতে পারছে না বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এসএস পাওয়ারের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবাদত হোসন ভূঁইয়া জানান, বর্তমানে কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ প্রায় ১২ টাকা। কয়লা আনা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রতিদিন পূর্ণ সক্ষমতায় চালাতে প্রায় ১২ হাজার টন কয়লা লাগে। জেটিতে ছয় হাজার টন ধারণক্ষমতার জাহাজ ভিড়তে পারে।

বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তুলনামূলক কম দামে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখছে কেন্দ্রটি। বর্তমানে কেন্দ্রটি পরিচালনায় ৫২৭ জন কর্মী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৭৪ জন বাংলাদেশি। বাকিরা চীনের নাগরিক।

কর্মকর্তাদের দাবি, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরুর আগে প্রকল্প এলাকায় বেকারত্বের হার ছিল ৫০ শতাংশ। এখন বেকারত্বের হার ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।