লেখক-প্রকাশক সম্পর্ক
ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে হয়ে উঠেছে উৎসব-পার্বণের মাস, যার কেন্দ্রে রয়েছে বই এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন লেখক-প্রকাশক ও পাঠক। তিনটি পক্ষ এখানে বিরাজমান, প্রবলভাবে যুক্তিযুক্ত কারণেই। পাঠক ভোক্তা। লেখক ও প্রকাশক মিলে পণ্য উৎপাদন করেন। অবশ্য বইকে সরাসরি পণ্য বলা যাবে কিনা, সে নিয়ে তর্ক চাউর আছে। পাঠক এখানে ভোক্তা আর লেখক-প্রকাশক উৎপাদক। পক্ষ তা হলে এখানে দুটি-এক. লেখক ও প্রকাশক, দুই. পাঠক। কী দাঁড়াল এতে? লেখক ও প্রকাশক কি এক? না, এক নন। একটা পক্ষ কিন্তু তারা পৃথক সত্তা। দেশের বাইরে এই পৃথকাবস্থা অনেক কম-অনেকাংশেই উভয়ে এক হয়ে উঠতে পেরেছেন। সেই চর্চা মূলধারা হিসেবে জারিও রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে তেমনটা হয়নি। অথচ আমাদেরই রয়েছে বইমেলার মতো মাসব্যাপী অসাম্প্রদায়িক এক উৎসব, যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
আমাদের লেখক-প্রকাশকরা যে কেবল এক হতে পারেননি, একত্রিত হয়ে এই শিল্পকে, এর সৃজন ও মননশীলতাকে প্রত্যাশিত মাত্রায় এগিয়ে নিতে পারেননি, ব্যাপারটা এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। উভয়ের মধ্যে হাজির রয়েছে অবিশ^াসের সম্পর্ক। দুটো বর্গে আপাতদৃষ্টে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলেও বাস্তবতা তেমন নয়। ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে একটা শিল্পের বৈশিষ্ট্য নির্মাণ করা যায় না, যৌক্তিকও নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লেখককুল জানেন না তার বই কত কপি ছাপা হয়, বছর শেষে সম্মানীর অবস্থা কী দাঁড়ায়। টাকা দিয়ে বই ছাপানোর মতো একটা অপসংস্কৃতির কথা কে না জানে! এসব অন্যায্যতা ও অরাজকতার কারণে আমাদের বইমেলার বয়স বাড়লেও এর সমৃদ্ধি কতটা ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সঙ্গত।
লেখক-প্রকাশক সম্পর্ক হওয়া উচিত ছিল মুদ্রার মতো। এ-পিঠে যদি লেখক থাকেন, বি-পিঠে থাকবেন প্রকাশক। কিন্তু বাস্তবতায় মনে হয়, মুদ্রাজুড়েই প্রকাশকের বসবাস। বই নামে এই মুদ্রা পাঠকের সঙ্গে বিনিময় হলে এবং অন্যবিধ পথে বিকিকিনি ঘটলে প্রকাশকই লাভবান হন। লেখক এ ক্ষেত্রে কেবলই লেখক ক্ষমতাধর হলে কিছু অর্থ পান বটে, তবে কোনো নিয়মের সুতোয় নয়, মর্জিমাফিক। বেশিরভাগ লেখকই এখানে গৌণ, নামসর্বস্ব। এই যদি হয় বাস্তবতা, তা হলে বুদ্ধিজীবীতার বিকাশ ঘটবে কীভাবে, এর জন্য দায়ী কে? দায়ী রাষ্ট্র। দায়ী এই বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। কারণ কেউই এ ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতির চর্চা জারি রাখেনি।
প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র কীভাবে ও কেন দায়ী। দায়ী এই কারণে, মানুষ রাষ্ট্রে বসবাস করে ন্যায্যতা পাওয়ার আশায়, নিয়মতান্ত্রিকভাবে সবকিছু সম্পন্ন হবে-এ প্র্রত্যাশায়। রাষ্ট্রের কাজ হলো এগুলো বাস্তবায়ন করা এবং এসব যেন সচল থাকে তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। লেখক-প্রকাশকের ক্ষেত্রে যে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, যে নিয়মনীতি বাস্তবায়নের দরকার ছিল, রাষ্ট্র তার কোনোটাই করে উঠতে পারে না।
বাংলা একাডেমি কোন প্রেক্ষাপটে, কী অবস্থায়, কী কী দাবি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা সবারই জানা। প্রশ্ন হলো, বাংলা একাডেমি কি সেসব বাস্তবায়ন করেছে বা করার চেষ্টা জারি রেখেছে? আয়োজক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি লেখক-প্রকাশক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
লেখকদের পক্ষ থেকে যেমন প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে প্রকাশকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে, প্রকাশকদের পক্ষ থেকেও অনেক অভিযোগ-আবদার রয়েছে। প্রকাশকদের সেই অভিযোগ-আবদার পূরণ করা লেখকদের কাজ নয়, সম্ভবও নয়। সেটা করতে পারে কেবল রাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উদ্যোগটা আসতে পারে বাংলা একাডেমির তরফ থেকে। বইমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এবারও করেছেন। একাডেমি কি কখনো উনাকে জানিয়েছে লেখক-প্রকাশক-পাঠকের চাওয়াগুলোর কথা? আমাদের কাছে সেটা কখনই দৃশ্যমান হয়নি। বাংলা একাডেমির সভাপতি, মহাপরিচালক বদলায় কিন্তু তাদের চারিত্র্যকাঠামো বদলায় না। একজন মহাপরিচালক আজও মিলল না, যিনি এসব ব্যাপারে সোচ্চার হবেন। লেখক-প্রকাশকের অবিশ^াস-আস্থাহীনতা-অভিযোগগুলো দূর করে এই শিল্পকে সমৃদ্ধ করবেন, বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। প্রকাশনাশিল্পে প্রকৃত পেশাদারিত্বের চর্চা বাস্তবায়ন করবেন।
আরও পড়ুন:
আমার ভেতরে কেউ কাঁদছে
লেখক-পাঠক সম্পর্কোন্নয়নে রাষ্ট্রের পক্ষে যেমন ফলপ্রসূ কোনো উদ্যোগ নেই, তেমনি ব্যক্তিপর্যায়ে বেসরকারিভাবেও জোরদার কোনো চেষ্টা নেই। বোধ করি এ কারণেই বইমেলা আগের তুলনায় স্ফীত হলেও, তার কলেবর বাড়লেও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবীতার উৎকর্ষ ঘটেনি।
প্রতিবছর বইমেলায় কয়েক হাজার বই প্রকাশিত হয়। পরিসংখ্যান বলে, সংখ্যাটা তিন হাজারের ওপরে। প্রশ্ন রয়েছে, এর মধ্যে কয়টা বই মানসম্মত। বইমেলার বই মানেই কবিতা-গল্প-উপন্যাস আর শিশুতোষ বইয়ের হুড়োহুড়ি এবং এসবের বেশিরভাগ বই-ই সম্পাদক কর্তৃক নির্বাচিত বই নয়। লেখক-প্রকাশকের মাঝখানে ‘সম্পাদক’ বলে যে একটা জায়গা রয়েছে এবং সেটা থাকাটা খুবই জরুরি আমাদের প্রকাশকরা সেটাকে আজ পর্যন্ত মান্যতাই দিল না। এ কারণেই বইয়ের নামে যে এখানে অনেক বেশি আগাছা উৎপাদন হয়, সেটাকে কেউই আমলে নিচ্ছি না। বই পড়া জরুরি, তার চেয়ে বড় কথা-ভালো বই পড়া জরুরি। এখন ভালো বই কে নির্ধারণ করে দেবে? সেটা পাঠকই নির্ধারণ করবে। ক্রমাগত বইপাঠের মধ্য দিয়ে তাকে ভালো বইয়ের দিকে যেতে হবে। ব্যাপারটা একদম সমুদ্র-দর্শনের মতো। সমুদ্র দেখতে হলে ঘর থেকে বেরোতে হবে এবং সমুদ্রমুখী যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে-তবেই দেখা মিলবে সমুদ্রের। এটা একটা দিক এবং একান্তই ব্যক্তিগত এক অধ্যবসায়ের দাওয়ায়। আমি মনে করি, এটা একটা উপায়মাত্র। আসল কাজটা কিন্তু করবে লেখক-প্রকাশক। উভয়ে মিলে যে পণ্য তৈরি করবেন, সেটার মধ্য দিয়েই পাঠকের-জাতির পাঠরুচি তৈরি হওয়ার বিষয়টা জারি থাকবে-এই বিষয়টা উনাদের গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। পাঠকের পাঠরুচি নির্মাণে লেখক-প্রকাশকই যে মুখ্য ভূমিকা রাখার কর্তা, সেটাকে দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে নেওয়া জরুরি।
লেখক-প্রকাশকের সম্পর্ক কেমন হলে এই শিল্পের সমৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে, তার জন্য একটু রবীন্দ্রনাথের কাছে ফেরা যাক। কবির বেশিরভাগ বইয়ের প্রকাশক ছিল বিশ^ভারতী। ফলে আক্ষরিক অর্থে বিশ^ভারতীর তরফে প্রকাশকের ভূমিকা আর কে পালন করবেন, যেখানে খোদ বিশ^ভারতীর স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ। এ ক্ষেত্রে কবির জীবনে প্রকাশকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন সম্পাদকরা।
রবীন্দ্রনাথের বিস্তর লেখালেখি সম্ভব হতো না, যদি না সম্পাদকদের থেকে চাপ না থাকত। এই চাপ কখনো কখনো যে ভুল বোঝাবুঝি হয়ে তাপ ছড়ায়নি-তা নয়। তবে সেসবের কোনোটাই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পৌনে দুইশ চিঠি বিনিময় হয়েছিল। রামানন্দ বাবু লেখার জন্য রবীন্দ্রনাথকে অগ্রিম সম্মানীও দিয়েছেন। মেয়ে শান্তা দেবীকে দিয়ে নিয়মিত তাগিদ রেখেছেন। তার পরও ‘বসুমতি’, ‘বিচিত্রা’ তাৎক্ষণিকভাবে আরও বেশি সম্মানী দিয়ে লেখা নিয়ে গেছেন। রবীন্দ্রনাথও না করতে পারেননি, জরুরিভাবে অর্থের প্রয়োজন দেখা দেওয়ায়। এই নিয়ে রামানন্দ অভিমান করে আর কখনো উনার পত্রিকায় না লেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ জানতেন এই ‘না’-এর অন্তর্গত অর্থ। বসে গেছেন লেখার টেবিলে। ‘গোরা’, ‘যোগাযোগ’, ‘শেষের কবিতা’, ‘মুক্তধারা’, ‘নটীর পূজা’র মতো বিখ্যাত সব লেখা রবীন্দ্রনাথের কলমে এসেছে সম্পাদকদের কারণেই। এই সম্পাদকরাই প্রকাশকরূপে হাজির ছিলেনÑপ্রকাশকের ধর্ম পালন করেছেন রবীন্দ্রজীবনে, যা থেকে স্পষ্ট, একজন লেখকের জীবনে প্রকাশকের ভূমিকা কতটা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিতে পারে।
অমর একুশে বইমেলার বইয়েও আমরা লেখক-প্রকাশকের যৌথ ভূমিকার-সুস্থ সম্পর্কের সবল প্রকাশ দেখতে চাই, যাতে কেবল সম্পর্কের দিনাতিপাত যেন না ঘটে, তাতে পুষ্টিও বিদ্যমান থাকে। বাংলা একাডেমির কাজ হলো জাতির মননকে সমৃদ্ধ করা। সেটা তখনই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হবেÑ যখন লেখক-প্রকাশক সম্পর্ক কেবল সম্ভাষণ-সম্বোধনে আর লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতায় নয়, বাস্তবিকই ন্যায্যতা চর্চিত বন্ধুতায় পরিগণিত হবে।
আরও পড়ুন:
দ্য স্প্যারোস নেস্ট
প্রযুক্তির আগ্রাসনে আমরা ভয়ঙ্কর এক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি। নতুন প্রজন্মের কাছে প্রযুক্তি-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসক্তে পরিণত হয়েছে, যা থেকে মুক্তি দিতে পারে পাঠাভ্যাস। বইয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’-এর ঘোষিত পাঁচ দফার দুই নম্বর দফায় উল্লেখিত হয়েছে, ‘এই সভা বাংলার পল্লীর বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠাগার ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠায় বিশেষভাবে উদ্যোগী হইবার জন্য দেশের কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাইতেছে।’
বই এমন একটা পণ্য যার সঙ্গে থেকে আপনি জীবনে অনেক কিছু পাওয়ার সুযোগ পাবেন। পৃথিবীতে কোনো কিছুই এর বিকল্প হতে পারে না। এ কারণে বই-বই এবং বই-ই মানুষের জীবনের সাধনা হওয়া দরকার। আমাদের সৌভাগ্য হলো, বাঙালির জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারির গর্ব ও গৌরব রয়েছে। বাঙালির একুশে সারা বিশে^র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় স্বীকৃত ও সম্মানিত। সেই ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হয় মাসব্যাপী বইমেলা, যা এখন উৎসবে পরিণত হয়ে বিশাল এক ‘সম্মিলন কেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে, যাতে প্রাণের টানে হাজির হন সারাদেশের মানুষ-বিদেশে অভিবাসী বাংলা ভাষাভাষীরাও। এসবই আমাদের জন্য সবিশেষ আত্মশ্লাঘার। এসব আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে, সার্থক ও অর্থবহ হবে যখন আমরা লেখক-প্রকাশক সম্পর্কে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।
একুশ আমাদের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অনির্বাণ এক বাতিঘর। সেই আলোয় আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছি। সেই দেশের মানুষরা ন্যায্যতার কথা বলবে-এটাই স্বাভাবিক ও সঙ্গত। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে সেই ন্যায্যতার চর্চা সমাজ-রাষ্ট্রে-প্রাতিষ্ঠানিকতায়-ব্যক্তিতে কতটুকু প্রতিষ্ঠিত করতে পারল, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
মাতৃভাষার ন্যায্যতায় সবার আগে কথা বলেছিল লেখক-কবি-সাহিত্যিকরা। কারণ তারা জানত মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হলে গণতন্ত্র আসবে না, সুশাসন আসবে না, সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে না, বৈষম্য কমবে না, বাক-স্বাধীনতা থাকবে না। মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই মর্যাদা যে কেবলই কাগজে-কলমে তা বোঝা যায় অন্যান্য ন্যায্যতার হ্রস্ব-লঘু অবস্থানে।
বেদনার হলো, যে ন্যায্যতার কথা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হওয়ার কথা লেখক-কবি-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিজনদের, তাদের অনেকেই বা বেশিরভাগ আজ ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে না থেকে ‘ইয়েস স্যার’-এর সারিতে নিজেদের হাজির করেছেন। এ কারণে একজন লেখকের মেধা শ্রমের ফসল যে বই, সেখানেও ন্যায্যতার কথা বলতে পারছেন না, বলছেন না। সেই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছেন তাদেরই সবচেয়ে নিকটজনÑপ্রকাশক বন্ধু। এর মধ্য দিয়ে যা উৎপাদিত হচ্ছে, তার প্রকৃত কৌলীন্য রক্ষিত হচ্ছে না।
ভালো বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে না। বইয়ের নামে ‘আগাছা’ উৎপাদন হচ্ছে বেশি। বই নিয়ে যত রকম কার্যক্রম চালু আছে এ দেশে, তার বেশিরভাগ কার্যক্রমই কেবল অর্থযোগের জন্য। এখানে মননসমৃদ্ধির কোনো বালাই নেই। এখানে একজন রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় নেই। ‘বিচিত্রা’, ‘বসুমতি’, ‘প্রবাসী’, ‘মডার্ন রিভিউ’ সম্পাদকের মতো সম্পাদক-প্রকাশকশ্রেণি নেই। ফলে বাংলা সাহিত্য বঞ্চিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের মতো যোগ্য উত্তরসূরি জন্ম দিতে। া