দ্য স্প্যারোস নেস্ট
উত্তরাধুনিক নগরজীবনের দাম্পত্য টানাপড়েনের উপাখ্যান ‘দ্য স্প্যারোস নেস্ট’। লিখেছেন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সুবাস। বই পড়তে পড়তে মনে হলো- আরে, ‘ধ্রুব’ তো আমিই। গল্পের চরিত্রে পাঠক নিজেকে আবিষ্কার করা মানে লেখক সার্থক। সেদিক থেকে দ্য স্প্যারোস নেস্ট সফল বলাই যায়। বইয়ের দ্বিতীয় গল্প ‘আরিরাং’ একই প্রেক্ষাপটে লেখা। চরিত্র বিন্যাসেও যথেষ্ট মিল। শুধু স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন। গল্পে উচ্চাকাক্সক্ষী মীরা অন্ধের মতো ভালোবেসে কনটেন্ট ক্রিয়েটর ধ্রুবর সঙ্গে নীড় বাঁধে। সংসারে আসে মেয়ে নীরা। আটপৌরে বা আধুনিক বাঙালি সমাজে এটাই চলছে। মেয়ে নীরাকে বাবা আদর করে স্প্যারোস ডাকে। প্রবহমান নদীর মতো গল্পের গাঁথুনি। ধ্রুব চাকরিচ্যুত হলে সংসারে অভাব চরম আকার ধারণ করে। মীরা উচ্চাভিলাষী। ধ্রুব তার উল্টো।মীরা অর্থাভাব মানতে পারে না। দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় সূত্রে একজনের সঙ্গে ঘর বাঁধে। অল্পদিনের ব্যবধানে পাড়ি জমায় অন্য একজনের সঙ্গে আমেরিকা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েও মায়ের কাছে বেড়ে ওঠে। মীরা নগরজীবনে দাম্পত্যের অস্থিরতার প্রতিচ্ছবি। মীরা সব সময় চেয়েছে, নীরা যেন তার বাবা ধ্রুবর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখে। কিন্তু আদালতের নির্দেশে মাসে দুবার তাদের দেখাসাক্ষাৎ হতে থাকে। বেশিরভাগ সময় দুজনের মাঝে মীরাও সঙ্গে থাকে। কিন্তু এতকিছুর পরও মেয়ে নীরা তার জন্মদাতা পিতার আদর্শই উত্তম মনে করে। আবার মায়ের সংস্পর্শে থেকে বড় স্বপ্ন দেখে। সে বৈমানিক হয়। বৈমানিক মেয়ের বিমানে ফের ধ্রুব-মীরার পুনর্মিলন ঘটে। সেই বিবেচনায় গল্পের নামকরণ ‘দ্য স্প্যারোস নেস্ট’ সার্থক হয়েছে।
‘আরিরাং’-এ উত্তর কোরিয়ার প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াং সুনর চরিত্র ঘিরে যেভাবে গল্পটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, একবারও মনে হয়নি এটা কাল্পনিক। তবে শুরুতেই বলেছি, বইয়ের দুটি গল্প একই ধরনের জীবনকাহিনি। বাংলা সিনেমার চিরাচরিত স্ক্রিপ্ট যেমন। দ্যা স্প্যারোস নেস্ট গতানুগতিক সিনেমার কাহিনির মতো হলেও লেখকের মুনশিয়ানার কারণে জীবনঘনিষ্ঠ আছে। আর গল্প মানেই জীবন থেকে নেওয়া। জীবনের গল্প যদি লেখকের হৃদয় ছুঁয়ে কলমে ধরা দেয় তবে সেই গল্প অবশ্যই পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দিতে বাধ্য। দ্যা স্প্যারোস নেস্ট পাঠক হিসেবে আমার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। া
আরও পড়ুন:
আমার ভেতরে কেউ কাঁদছে
আরও পড়ুন:
অন্তিমের ইচ্ছাপত্র