অব্যবস্থাপনা দ্রুত দূর করতে হবে
গতকাল ছিল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস। অফিস ছুটির পর বিকালে বইমেলায় আসতে ভোলেননি অনেকেই। বইপ্রেমী পাঠক ও দর্শনার্থীদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতোই। তারা বই খুলেছেন, নেড়েচেড়ে দেখেছেন। কিনেছেনও। এবার শুরু থেকেই বেশ ভিড় জমছে বইমেলায়। অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ বলেন, আমাদের স্টলে কম-বেশি বই বিক্রি হচ্ছে। আশা রাখছি সামনে অবশ্যই বিক্রি বাড়বে।
টাঙ্গন প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী অজয় কুমার রায় বলেন, বইপ্রেমীদের আগমন দেখে মনে হচ্ছে এ বছর মেলা ভালোই জমে উঠবে। তবে এখনো মেলা পুরো প্রস্তুত হয়ে উঠতে পারেনি। চলার পথে পড়ে আছে ছোটখাটো নির্মাণসামগ্রী ও ময়লা-আবর্জনা। কিছু স্টল এমন স্থানে পড়েছে যেখানে পাঠকের আনাগোনা একেবারে কম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরবান হোসেন বলেন, কিছু বই আজকে পছন্দ হয়েছে। লিস্ট করে রাখছি। ধীরে ধীরে কিনব।
আজিমপুর থেকে আসা মামুন বলেন, বন্ধুদের ফোন পেয়ে মেলায় এসেছি আড্ডা দিতে। বই পছন্দ হলে অবশ্যই কিনব।
গতকাল বেলা ৩টায় খুলে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথ। অপেক্ষায় থাকা বইপ্রেমীরা সারিবদ্ধভাবে ঢুকে পড়েন বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে। একই চিত্র দেখা যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশেও। এরপর স্টলে স্টলে ভিড়। চলে বই দেখা, বই কেনা। ভাষা শহীদদের ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন কেউ কেউ। অনেককে জমিয়ে আড্ডা দিতে দেখা যায় লেক পাড়ে, অন্যান্য স্থানে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
এদিকে মেলার অব্যবস্থাপনা নিয়েও অভিযোগ করেছেন অনেকে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তথ্যকেন্দ্রের পাশে নতুন বইয়ের একটি প্রদর্শন কেন্দ্র রাখার কথা থাকলেও সেটা এখনো চালু হয়নি। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। টয়লেট নিয়ে সন্তুষ্ট নন আগতরা। নারীদের বিড়ম্বনা বেশি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের টয়লেট বন্ধ। মাঠের পূর্বপাশের টয়লেটের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পানির সমস্যা, পরিবেশও ভালো না।
এবার লিটলম্যাগ চত্বরের স্টল নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে একাধিক লিটলম্যাগকর্মীর। স্টলের সামনে দাঁড়ানোর জায়গা নেই, স্টল আড়াল হয়ে গেছে গাছেÑ এমন সব অভিযোগ।
গতকাল চতুর্থ দিনে মেলা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।
নতুন বই : নতুন বই এসেছে ৬৬টি। এর মধ্যে গল্প ৯, উপন্যাস ১২, প্রবন্ধ ৫, কবিতা ১০, গবেষণা ১, জীবনী ১১, মুক্তিযুদ্ধ ১, ভ্রমণ ৪, ইতিহাস ১, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ২, রম্য/ধাঁধা ৬, ধর্ম ১, অনুবাদ ২ ও অন্যান্য ১টি।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
মূলমঞ্চের আয়োজন : স্মরণ : কাঙাল হরিনাথ মজুমদার শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তপন মজুমদার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাফর ওয়াজেদ ও আমিনুর রহমান সুলতান। সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন। এতে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
লেখক বলছি : নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন চলচ্চিত্রকার ও লেখক তানভীর মোকাম্মেল, শিশুসাহিত্যিক বেণীমাধব সরকার, গবেষক কাজল রশীদ শাহীন এবং কবি ফারুক আহমেদ।
সাংস্কৃতিক আয়োজন : কবিতা পাঠ করেন কবি আনিসুল হক, ফারুক মাহমুদ এবং ঝর্না রহমান। আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ডালিয়া আহমেদ ও নায়লা তারান্নুম চৌধুরী। এ ছাড়া ছিল অনুপম বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘বেসিক একাডেমি অফ ইয়োগিক অ্যাকুস্টিক ট্রেডিশনাল ইনস্ট্রুমেন্ট’ এবং মো. সাজেদুল ইসলাম ফাতেমীর পরিচালনায় ‘নকশিকাঁথা’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন ফরিদা পারভীন, চন্দনা মজুমদার, আব্দুল লতিফ শাহ, আরিফ দেওয়ান, সরকার আমিরুল ইসলাম।
আজকের আয়োজন : বিকাল ৪টায় মূলমঞ্চে সার্ধশত জন্মবার্ষিকী শ্রদ্ধাঞ্জলি : মোহাম্মদ রওশন আলী চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম