রাজপথ দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা

আজ আ.লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ

মুহম্মদ আকবর
২৭ জানুয়ারী ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
রাজপথ দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা


রাজধানীতে আজ বিএনপির ডাকা কালো পতাকা মিছিলের বিপরীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশের ডাক দিয়েছে। আজ শনিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি রাজধানীতে শনিবার জনসমাগম ঘটানোর চেষ্টা করছে। এমন অবস্থায় এ দিন রাজপথ নিজেদের দখলে রাখতে পাল্টা সমাবেশ করবেন তারা। এ জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ব্যানারে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তারা। এ সমাবেশ সফল করতে বর্ধিত সভাও করেছে আওয়ামী লীগ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেবেন।

ফের বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো রাজপথের নামার বিষয়টিকে আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে কিনা জানতে চাইলে দলটির সভাপতিম-লী সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, ‘আগে নামুক। তারপর দেখি

চ্যালেঞ্জ কি-না। এর আগে কিছু না বলাই ভালো। কারণ গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটা দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার সুযোগ আছে।’

শুক্রবার দলের ত্রাণ উপকমিটির শীতবস্ত্র বিতরণের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করলে করুক, বাধা নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। বিএনপি আন্দোলন করবে, জনতার ঢল নামবে- এসব শুনে ঘোড়াও হাসে। নিজেদের নিজেরাই ভুয়া বানিয়ে ফেলছে বিএনপি।’

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে হলেও রাজধানীজুড়েই সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ ও দলের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিএনপি তাদের কর্মসূচি করবে, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতায় জড়ালে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে কোনো কর্মসূচি আছে কিনা জানতে চাইলে বজলুর রহমান বলেন, ‘মানুষের স্বাভাবিক জীবনমান যেন ব্যাহত না হয় সেদিক লক্ষ্য রেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করবে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপির এমন কোনো শক্তি নেই যে তারা সারা ঢাকায় অস্থিরতা তৈরি করবে। কারণ চোরাগুপ্তা হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস ছাড়া অতীতে তেমন কিছু করতে পারেনি। আর এখন তো পারবেই না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহাম্মেদ মন্নাফী আমাদের সময়কে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে আমাদের বলেছে সমাবেশ সফল করার জন্য। রাজধানীজুড়ে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়নি। দরকারও নেই। আশা করি নেতাকর্মীরা মান-অভিমান ভুলে এসে সমাবেশ সফল করবে।’

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই থেকে দেড় বছর টানা আন্দোলন-কর্মসূচিতে ছিল বিএনপি। বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি দিয়ে বিশেষ করে- শান্তি সমাবেশের নামে মাঠে ছিল। আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিম-লীর সদস্য তখন বলেছিলেন বিএনপি যতদিন মাঠে থাকবে, ততদিন আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে।

আওয়ামী লীগের লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করতেই পারে। এটা তাদের রাজনৈতিক অধিকার। কিন্তু সহিংসতা করা মানে মানবাধিকার লঙ্ঘন। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়ানো ছাড়া জনগণ তাদের থেকে কিছু পায়নি। ফলে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং এই আন্দোলন আলোর মুখ দেখবে না, আমরা এটাই মনে করি।’