২০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত রাজশাহীর কৃষি
রাজশাহী জেলায় গত ১০ বছরে ফসল উৎপাদন প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। এক ফসলি অনেক জমিতে এখন ফসল ফলে বছরজুড়েই। গত বছর জেলার ৪ লাখ হেক্টর জমিতে ফসল উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টন। এর মধ্যে প্রধান ১০টি ফসলের বাজারমূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ১০ বছর আগে ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ১০ বছরের প্রতিবেদন এবং ফসলের বাজার দর বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য মিলেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রাজশাহী জেলায় চার লাখ ১৫ হাজার পরিবার কৃষিকাজে সম্পৃক্ত। কৃষি পরিবারের পাশাপাশি অনেকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসছেন কৃষিকাজে। বিনিয়োগ করছেন বিপুল অর্থ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০২৩ সালে রাজশাহী জেলায় ৩ লাখ ৯৯ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। প্রধান ১০টি ফসলের উৎপাদন ছিল ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৪ টন, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৯ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে রাজশাহী জেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর। তখন প্রধান ১০টি ফসলের উৎপাদনের পরিমাণ ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৬ টন। তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল ৪ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
প্রধান ১০টি ফসলের তালিকায় রয়েছে- ধান, সবজি, পেঁয়াজ, আলু, সরিষা, গম, ভুট্টা, পাট, পান এবং আম। এর মধ্যে উৎপাদিত আলুর বাজারমূল্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা (৫০ টাকা কেজি হিসাবে)। চালের বাজার চার হাজার কোটি টাকার (৫৫ টাকা কেজি হিসাবে)। সবজির বাজারমূল্য ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া পানের বাজার দুই হাজার ২০০ কোটি, পেঁয়াজের বাজার দুই হাজার কোটি ও আমের বাজার এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া গমের বাজার ৫৫০ কোটি টাকার, ভুট্টার ৫০৯ কোটি, সরিষার ৬২৭ কোটি এবং পাটের বাজার ২৫০ কোটি টাকার মতো।
কৃষি বিভাগ জানায়, রাজশাহীতে পদ্মার বুকে বড় বড় চর জেগেছে। এসব চরে আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার হেক্টর। এসব জমিকে উৎপাদনের আওতায় আনতে চায় কৃষি অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, ফসলের মাঠে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষকদের সচেতনতার ফলে এই অঞ্চলে কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে। এ ছাড়া অনেক জমিতে বছরে এখন চারবারও ফসল হয়।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, ‘ফসলের উৎপাদন ও বিক্রয়মূল্য বিশ্লেষণ করলে দেখব, ১০ বছরে এই জেলায় প্রায় ৫ গুণ উৎপাদন বেড়েছে।’ তিনি জানান, নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে মাল্টা, কমলা, ড্রাগন ফল, চীনা, বিট কপির মতো ফসলও রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা, পেপে ও কুলের চাষও বেড়েছে।