পিডিবি-বিসিআইসির কাছে ১০০০০ কোটি টাকা বকেয়া
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ৮ হাজার কোটি এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) কাছে ২ হাজার কোটি মিলিয়ে মোট ১০ হাজার কোটি টাকা গ্যাস বিল জমা পড়ে আছে। এ অবস্থায় গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো আর্থিক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে। কারণ এসব কোম্পানিকে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস কেনার বিল পরিশোধ করতে হয়; বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এলএনজির বিল পরিশোধ করতে হয়।
দীর্ঘদিন যাবৎ গ্যাস বিলের এমন বিশাল বকেয়ায় সংকটে আছে জ্বালানি বিভাগও। নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েও বিল আদায় করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভায়ও আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে দ্রুত বিল আদায় করার।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীন নানা সংকটের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক সংকট রয়েছে। ডলার সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় আমদানিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় ১০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া থাকা সমীচীন নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে পিডিবি ২৮৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
এ ছাড়া দুটি আইপিপি কোম্পানি বিশাল পরিমাণ বকেয়ার বিপরীতে মাত্র ৪১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসের পর আইপিপি কোম্পানিগুলো গ্যাস বিল বাবদ কোনো টাকা পরিশোধ করেনি।
জানা গেছে, বিসিআইসির গ্যাস বিল বাবদ ২ হাজার কোটি টাকা বকেয়া আদায়ের বিষয়ে অনেকবার সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ডিসেম্বরের সভায় বলা হয়েছে, বিসিআইসির কাছ থেকে টাকা আদায়ে কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ দুটি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে বকেয়া পরিশোধ করা যাবে। বিসিআইসির টাকা পরিশোধে অর্থ মন্ত্রণালয় ইতিবাচক অবস্থানে আছে বলেও সভায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান।
এ ছাড়া বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকদের সংগঠন আইপিপির নিকটও অনেক টাকা বকেয়া জমা পড়েছে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়। সভায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোম্পানি ও সংস্থাগুলোর বকেয়া আদায়ে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের আরও তৎপর থাকতে হবে। নিয়মিত মনিটর করতে হবে।
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন
এদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের একটা গ্যাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটা ধীরে ধীরে পূরণ করা হবে। তিনি বলেন, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির কাছে অনেক টাকা গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে। এগুলো আদায়ে তৎপরতা চলছে।