উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

আমাদের সময় ডেস্ক
১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত

হিমালয়ের কাছে হওয়ায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উত্তরের জনপদে আগেভাগেই শীতের তীব্রতা বেশি লক্ষ করা যায়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। গত কয়েকদিন ধরেই শীত জেঁকে বসেছে উত্তরাঞ্চলে। গতকাল রবিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় তেঁতুলিয়ায়; ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় কাহিল হয়ে পড়ছে নিম্নআয়ের মানুষ। আমাদের সময়ের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা আরও জানানÑ

দিনাজপুর: গত কয়েক দিনের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে দিনাজপুরের তাপমাত্রা। রবিবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলো। একই সঙ্গে এটি দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান।

কুড়িগ্রাম : গত কয়েক দিন ধরেই শীত জেঁকে বসায় কাবু হয়ে পড়েছে জেলার দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষ। রবিবার সকালে কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা করার কথা জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস। কয়েক দিন ধরেই সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। গত এক সপ্তাহ থেকে জেলার সর্বনিম্ন

তাপমাত্রা ১৫-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। শীতের প্রকোপে বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। শীত নিবারণের জন্য মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো আগাম প্রস্তুতি নিলেও নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ শীতবস্ত্র সংগ্রহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। এ ছাড়া প্রচণ্ড ঠান্ডায় গরু-ছাগলগুলোর কষ্ট হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, শীতার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে ৯ উপজেলা ও ৩ পৌরসভায় ৩১ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণভান্ডারে মজুদ রয়েছে আরও ১৫ হাজার কম্বল।

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে গোটা জনপদ। শীতবস্ত্রের অভাবে বিপাকে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীতীরবর্তী বাঁধ ও চরের মানুষজন।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) : গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর গত দুদিন থেকে শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে এলাকা ঢাকা থাকছে। দুপুরের সুর্যের দেখা মিললেও তাও আবার রোদের তাপমাত্রা নেই বললেই চলে।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, রবিবার সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগামীতে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : গত কয়েকদিনের থেকে হঠাৎ করে বেড়েছে শীতের পারদ। রবিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শনিবার রেকর্ড হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার এ তথ্য জানিয়েছেন প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় ঢাকা উপজেলার প্রকৃতি। শহর ও গ্রামীণ সড়কগুলোতে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে।

লালমনিরহাট : ঘন কুয়াশা আর শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে চারদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকছে সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এতে করে ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র লোকজন সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। উত্তরের জেলা লালমনিরহাট হিমালয় পর্বতের খুব কাছাকাছি হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। লালমনিরহাটে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে শীতের আবহ তেমন না হলেও হঠাৎ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে, সে সঙ্গে কমেছে তাপমাত্রা।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত নিউমোনিয়া আক্রান্ত বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে।