দাম কমাতে বিকল্প উৎসের সন্ধান

আবু আলী
১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
দাম কমাতে বিকল্প উৎসের সন্ধান

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় দেশে এ নিত্যপণ্যটির বাজার ভীষণ অস্থির হয়ে উঠেছে। গতকাল রবিবার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধির বিষয়ে বিস্মিত খোদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। একদিনের ব্যবধানে দাম ৮০ টাকা বাড়ে কীভাবে?- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যিনি একদিন আগে ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করলেন, পরদিন কীভাবে সেটার দাম ২০০ টাকা হয়ে গেল? দাম বাড়তে তো সময় লাগার কথা!

কিন্তু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় কোনো নৈতিকতা দেখালেন না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমদানির বড় উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হবে। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, মাত্র একদিন হয়েছে। বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শিগগির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। প্রয়োজনে বড় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত থেকে আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল চিঠি পাঠিয়েছে। এ ছাড়া দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিংয়ের জন্য সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে সেখান থেকে বাংলাদেশে ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এখন সেই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এ তথ্য জানিয়েছেন সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কীভাবে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পআয়ের মানুষের মাঝে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, বিভিন্ন বাজারে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এটি চলবে। তিনি বলেন, আমরা বাজারে গিয়ে তদারকি করছি- কত দামে এ পেঁয়াজ কেনা ছিল। একদিনে বাজারে মূল্য এত বেড়ে যাওয়ার কথা নয়। আগে কম দামে পেঁয়াজ কিনে এখন চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, জানান তিনি।