‘আমরা ভালো ব্যাট করিনি’

ক্রীড়া প্রতিবেদক
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
‘আমরা ভালো ব্যাট করিনি’

সিলেটে প্রথম টেস্টের উইকেট বেশ ভালো ছিল। উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের কোনো অভিযোগ ছিল না। চায়ের শহরে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। প্রথম টেস্ট জেতায় আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায় নাজমুল হোসেন শান্তদের। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ভালো কিছুর আশা ছিল তাদের। তবে ঢাকা টেস্ট জিততে না পারায় প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি টাইগারদের। চতুর্থ দিনে গ্লেন ফিলিপসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় শেষ সেশনে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড; ফলে সমতায় (১-১) শেষ হয়েছে সিরিজ। মিরপুরের স্লো ও লো উইকেটে দুই ইনিংসেই দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন ফিলিপস। ঢাকা টেস্টে নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক তিনি। তবে ফিলিপসের মতো বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা; সর্বোচ্চ ৩৫ ছিল মুশফিকের। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানে থামে বাংলাদেশ; সর্বোচ্চ ৫৯ রান জাকির হাসানের। নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা যে আহামরি ভালো বোলিং করেছেন তাও কিন্তু নয়। স্বাগতিক কিছু ব্যাটসম্যান নিজের উইকেট ‘উপহার’ দিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে প্রথম ইনিংসে মুশফিকের ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ ও দ্বিতীয় ইনিংসে সোহানের এলবিডব্লিউ উল্লেখযোগ্য। গতকাল ঢাকা টেস্ট হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে ব্যাটসম্যানদের দায়ী করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা ব্যাটসম্যানরা খুব একটা ভালো ব্যাট করিনি। প্রথম ইনিংসে ২৩০-২৪০ রানের উইকেট ছিল। ওই জায়গায় আমরা রানটা কম করার কারণে মনে হচ্ছে উইকেটটা অনেক খারাপ। অবশ্যই নতুন বলে চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রত্যেকটা সিচুয়েশনই থাকে, যখন আমরা অ্যাওয়েতে খেলি তখনো নতুন বলের চ্যালেঞ্জটা থাকে। এখানে আলাদা কিছুই ছিল না। আমরা ব্যাটিংটা আরেকটু ভালো করলে হয়তো এই সিচুয়েশনটা ক্রিয়েট হতো না।’

বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ নেওয়ার পক্ষে। দেশের মাটিতে শতভাগ ম্যাচ জিততে মরিয়া লংকান কোচ। সিরিজে এগিয়ে থাকায় মিরপুরে নিজেদের শক্তিমত্তা আর প্রতিপক্ষের দুর্বলতা বিবেচনায় ঢাকা টেস্টের উইকেট স্পিনসহায়ক করা হয়েছে। তবে হিতে বিপরীতই হয়েছে। নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেরাই শিকার হয়েছেন! মিরপুরের স্লো ও লো উইকেটে রান করাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন। আর এখানে স্পিনাররা সব সময় রাজত্ব করে থাকেন। ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতে, সিলেটের মতো ভালো উইকেটে ঢাকা টেস্ট আয়োজন করা উচিত ছিল। তাতে বাংলাদেশ হারলেও ভবিষ্যতে দেশের বাইরে গিয়ে তারা ভালো করত। নাজমুল হোসেন অবশ্য হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার পক্ষেই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে আমরা উন্নতি করতে আসিনি, জিততে এসেছি। এখানে জেতার জন্য আমাদের প্রস্তুতিটা কেমন হওয়া উচিত তা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধরনের অ্যাডভান্টেজ অবশ্যই নেওয়া উচিত।’ নাজমুল হোসেন জানান, সাদা বলের ক্রিকেটে সব সময় ভালো উইকেটে খেলা উচিত। তিনি বলেন, ‘হোমে আমরা যখন সাদা বল মানে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলব, তখন আমাদের সব সময় ভালো উইকেটে খেলা উচিত। যদি আমরা বড় টুর্নামেন্টে ভালো করতে চাই। শেষ বছর বিপিএলে খুব ভালো উইকেট ছিল। ডিপিএলে মোটামুটি ভালো উইকেটই থাকে। লাল বল, সাদা বল আলাদা। গেম প্ল্যানটা আলাদাভাবে করতে হবে।’ সাকিব আল হাসান না থাকায় এ টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন নাজমুল হোসেন। তার অধিনায়কত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও। লাল বলের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে নাজমুল হোসেন বলেন, ‘প্রথমত খুবই গর্বিত। প্রথম ম্যাচটা খুবই ভালো খেলেছি আমরা। দ্বিতীয় ম্যাচটায় সবার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুব ভালো ছিল। ১৩৭ টার্গেট দিয়েছিলাম, তার পরও বোলাররা যেভাবে চেষ্টা করেছে, তাতে আমি বেশ খুশি। উন্নতির জায়গা আছে, ব্যাটিংয়ে আরেকটু বেটার আমরা কীভাবে করতে পারি... এ জায়গাটায় একটু ঘাটতি আছে। আমি বলব না আমাদের উন্নতি হচ্ছে না, এখানে অনেক প্লেয়ার আছে যারা একদমই নতুন। কিন্তু দেখে কারও মনে হয়নি অমন নার্ভাস বা টেনশন ফিল করছে। সবাই দলের জন্য খেলার চেষ্টা করেছে। এই দিকগুলো পজিটিভ ছিল।’