অপ্রতিরোধ্য রদ্রিগো
বয়স ২৩ ছুঁইছুঁই। এইটুকু বয়সে ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন দুটোই দেখা হয়ে গেছে রদ্রিগো সিলভা দা গৌজের। পেশাদার ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের একাদশের নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের এই মৌসুমেও মুদ্রার দুই পিঠ দেখা হয়ে গেছে। স্প্যানিশ লা লিগার কথাই ধরা যাক। মৌসুমের প্রথম ১২ ম্যাচে করেছেন স্রেফ এক গোল। আর সতীর্থের গোলে একবারই রেখেছেন অবদান। একজন ফরোয়ার্ডের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স অবশ্যই প্রত্যাশিত নয়। অবশেষে দুঃসময়কে জবাব দিয়েই চলেছেন ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড। গোল করেই চলেছে তিনি।
বাজে সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে ট্রলের শিকার হয়েছেন রদ্রিগো। রিয়াল মাদ্রিদের সেই ফরোয়ার্ডই এখন ফর্ম আর আত্মবিশ^াসে বৃহস্পতির তুঙ্গে আছেন। লিগে শেষ ৩ ম্যাচে রদ্রিগো করেছেন ৫ গোল; সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৩টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫ ম্যাচে ৭ গোল ও ৪টি অ্যাসিস্ট তার। সবশেষ গোলটি এসেছে পরশু রাতে; গ্রানাডার বিপক্ষে। রিয়াল মাদ্রিদের ২-০ ব্যবধানের জয়ের নায়ক তিনিই।
ব্রাজিলের ওসাকোতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পেলে-নেইমারদের আঁতুড়ঘর সান্টোস থেকে সত্যিকারের ফুটবলার হয়ে ওঠা। তবে ২০১৯ সালে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর ফুল হয়ে ফুটতে শুরু করেন এই তরুণ তুর্কি। প্রায় দুই বছর আগে স্প্যানিশ জায়ান্টদের রূপকথার প্রত্যাবর্তনের অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি। দেড় মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করে অবিশ^াস্যভাবে রিয়ালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখেন রদ্রিগো। ম্যানচেস্টার সিটিকে বিপক্ষে সেই ম্যাচ বহুদিন মনে থাকার কথা ভক্তদের। যা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফেরার একটি গল্প। এই গল্পে করিম বেনজেমা, ড্যানি কারভাহালরা থাকলেও কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন এই রদ্রিগোই।
আরও পড়ুন:
সূর্যর সাফল্যের মন্ত্র
ক্লাব ফুটবলে স্বপ্নের মৌসুম পার করা রদ্রিগোর আন্তর্জাতিক ফুটবলটা ভালো কাটেনি। গত বছরের শেষ দিকে কাতার বিশ^কাপে কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টি মিস করে চলে যান খলনায়ক বনে। কিছুদিন আগে ২০২৬ বিশ^কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সুপার ক্লাসিকোতেও বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার উত্তপ্ত লড়াইয়ে লিওনেল মেসির সঙ্গে বিবাদ হয় তার। পরে নেট দুনিয়ায় বর্ণবিদ্বেষেরও শিকার হন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। সব মিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না রদ্রিগোর। তবে এসব ঘটনা যে রদ্রিগোকে তাতিয়ে দিয়েছে সেটি অনুমান করাই যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফেরার পর এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন রদ্রিগো। জুড বেলিংহামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্প্রতি গোল করে চলেছেন তিনি। এই রদ্রিগোতে মুগ্ধ ইংলিশ ফরোয়ার্ড। বেলিংহাম লিখেছেন, ‘থেমে যেও না রদ্রিগো।’ আরেক সতীর্থ অ্যান্তনিও রদ্রিগো লিখেছেন, ‘রদ্রি-গোল’।
রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান কোচ কার্লো আনচেলত্তি তো রীতিমতো প্রশংসার ঝাঁপি খুলে দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান সেনসেশনের জন্য। ইতালিয়ান কোচের ভাষায়, ‘রদ্রিগো দারুণ। ও সেরা ছন্দে ফিরে এসেছে। অনেক গোল করছে। আজ (শনিবার) প্রমাণ করেছে যে ও শুধু বাঁ প্রান্ত দিয়েই গোল করে না। মাঝামাঝি বা ডান প্রান্ত থেকেও গোল করতে পারে। দ্বিতীয়ার্ধে আমি ওকে ডান প্রান্তেই বেশি খেলিয়েছি। আমি ভেবেছি এতে রদ্রিগো আরও বেশি জায়গা পাবে। আর কাজটা ও করেও দেখাতে পেরেছে।’
আরও পড়ুন:
বিপাকে আলভেস
আরও পড়ুন:
শেষটা রাঙাতে পারবেন কি ডি মারিয়া