সাকিবের পাশে তাইজুল

ক্রীড়া ডেস্ক
২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩
শেয়ার :
সাকিবের পাশে তাইজুল

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে টাইগার বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২৬৫ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। এদিন বল হাতে সফল ছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৪ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়ার একেবারে দ্বারপ্রান্তে তিনি। ইতোমধ্যেই ছুঁয়েছেন সাকিব আল হাসানের রেকর্ডকে। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিব আল হাসানের। তাইজুলও সাকিবের সমান ২৪৬ উইকেট নিয়ে পাশে বসছেন। আর একটা উইকেট পেলে সাকিবকে ছাড়িয়ে যাবেন। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হবেন তিনি।

৯৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় দিনের শুরুটা ভালো হয় আইরিশদের। টানা বল করেও উইকেটের দেখা পাচ্ছিল না তাইজুল, এবাদত হোসেন, হাসান মুরাদরা। অবশেষে ৫৮তম ওভারে উইকেটের দেখা পায় স্বাগতিকরা। সে ওভারে স্টিফেন ডোহেনি ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রায়েনকে ফেরান তাইজুল।

একপর্যায়ে ২০০ রানের আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগলেও অষ্টম উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের অপেক্ষা বাড়ান লোরকান টাকার ও জর্ডান নিল। নিলকে ৪৯ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন এবাদত। এরপর টাকারকে সঙ্গ দিতে পারেননি গ্যাভিন হো ও ম্যাথু হামফ্রিস। ৮৪তম ওভারের তৃতীয় বলে ৪ রান করা হামফ্রিসকে খালেদ আহমেদের ক্যাচ বানিয়ে আয়ারল্যান্ডকে অলআউট করেন তাইজুল। হমফ্রিসকে ফিরিয়ে টেস্টে যৌথভাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার বনে গেছেন তাইজুল। এই সংস্করণে এটা তার ২৪৬তম উইকেট। সমান উইকেট নিয়ে এত দিন এককভাবে শীর্ষে ছিলেন সাকিব। আর মাত্র এক উইকেট পেলেই টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে ইতিহাস গড়বেন তাইজুল।

তাইজুলের জন্য সাকিবকে পেছনে ফেলে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তাইজুল। তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি আল্লাহ ৭০০ উইকেট দেয়, আমি ৭০০টা নিতেই রাজি আছি। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের একটা লক্ষ?্য থাকে যে আমি জাতীয় দলে খেলব। প্রথম লক্ষ্য এটা থাকে। কিন্তু খেলার পর অনেকে চিন্তা করে আমি এত দূর যাব বা অত দূর যাব। একেকজনের গোল একেক থাকে। ব্যক্তিগতভাবে আমার এমন কোনো গোল ছিল না। আমি এখানে শেষ করব বা এ পর্যন্ত যাব। চেষ্টা করব আমি যতদূর যেতে পারি আমার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত।’

জাতীয় দলের হয়ে তার পারফরম্যান্স করাটাই মূল্য লক্ষ্য, ‘আপনি যখন জাতীয় দলে খেলবেন তখন আপনাকে পারফরম্যান্স করতে হবে। এটা হচ্ছে পারফরম্যান্সের জায়গা। এটা আসলে বলাটা কঠিন যে আমি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হব কি হব না। কিন্তু যে সময়টা দেখা যাচ্ছে যে আমার একটা ধারাবাহিকতা আসছে এবং অভিজ্ঞতা এসেছে। আমার নিজের মধ্যেও একটা আত্মবিশ্বাস আসছে যে বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক দিন একটা সুযোগের মধ্যে রাখবে।’ সাকিবের থেকেও পরামর্শ নিতেন বলে জানালেন তাইজুল, ‘উনার অভিজ্ঞতা ছিল, উনি অনেক দিন বাংলাদেশের... বিশ্বের এক নাম্বার পজিশনে ছিলেন। আসলে একটা মানুষ তো এক নাম্বার পজিশনে এমনি এমনি যেতে পারে না। অবশ্যই উনার মধ্যে ওরকম কিছু ছিল, ওরকম কোয়ালিটি ছিল। আমি চেষ্টা করছি ওই জিনিসগুলো নেওয়ার জন্য এবং আমাদেরকে উনি সবসময় সাজেশনও দিত এবং আমাদের উনার অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু পারছে আমাদের সঙ্গে ডিসকাস করছে যে আমরা আসলে কীভাবে এগিয়ে যেতে পারি।’ কখনও সাকিবের অনুপস্থিতিতি, কখনও সাফল?্যরে পার্শ্ববোলার হিসেবে তাইজুল বিবেচিত হয়ে আসছিলেন। নায়ক হয়েও থাকতেন আড়ালে। পাদপ্রদীপের আলো বাইরে। সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংকে তো একবার বলেওছিলেন, ‘আমাদের আরেকজন ওয়ার্ল্ড ক্লাস স্পিনার আছে সাকিব, যে তাইজুলের আগে থাকে। তাই তাইজুল সব সময় সামনে থাকে না। কিন্তু রেকর্ড তার পক্ষে কথা বলছে। আপনারা হয়তো সে ভালো করলেই শুধু কথা বলেন।’