‘নিরপরাধ’ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা, এসআইসহ ৬ পুলিশ অবরুদ্ধ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে ‘নিরপরাধ ব্যক্তিকে থাপ্পড় মারা ও হ্যান্ডকাফ পরানোর’ অভিযোগে একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নাচোল উপজেলার হাঁকরইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম তাদের উদ্ধার করেন।
পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় নাচোল থানার এসআই আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল হাঁকরইল গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। সেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর একটি বাড়ি থেকে স্থানীয়ভাবে তৈরি চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়, তবে কাউকে আটক করা যায়নি।
অভিযানের মধ্যেই মাদকের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও গ্রামের কৃষক মো. মজিবুর রহমানকে আটক করেন এসআই আতাউর রহমান। অভিযোগ উঠেছে, তিনি মজিবুরকে ঘটনাস্থলেই দুই থাপ্পড় মারেন এবং হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গাড়িতে তোলেন। এতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী চারদিক থেকে পুলিশকে ঘিরে ফেলে। মিনিট দশেকের মধ্যে দুই শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে ছয় পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নাচোল ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘মজিবুর রহমান গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক। তার মাদকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তবু তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গ্রেফতারের চেষ্টা ও দুর্ব্যবহার করায় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশকে আটকে রাখে।’
ইউপি চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাউকে আটক বা হ্যান্ডকাফ পরানোর আগে যাচাই-বাছাই করা উচিত ছিল। তা না করে নিরপরাধ লোককে হয়রানি করায় গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করেছে। তাদের দাবি, প্রকৃত মাদক কারবারিদের ধরুক পুলিশ, নিরীহ মানুষকে নয়।’
নাচোল থানার ওসি শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, ‘পুলিশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে, এমন কিছু নয়। মাদক উদ্ধার অভিযানে একজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে স্থানীয়রা জানায় ওই ব্যক্তি নিরপরাধ এবং মাদকের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তখন তাকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশ চলে আসে।’
আমাদের সময়/আরডি