‘মেয়েদের জীবনের থেকে একটা ওড়না বেশি গুরুত্বপূর্ণ’
রাজধানীসহ সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের আকস্মিকতা ও তীব্রতা সারা দেশের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরইমধ্যে অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক একটি ব্যতিক্রমী বার্তা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছেন।
ভূমিকম্পের ঘণ্টাখানেক পর অভিনেত্রী ফেসবুকে লেখেন, ‘মেয়েদের জীবনের থেকে একটা ওড়না বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
চমকের এই পোস্ট মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে অনেকেই অভিনেত্রীর লেখাটি নিজেদের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
নিজের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ভূমিকম্প নিয়ে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চমক। পাঠকদের জন্য পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো।
ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে- এসব নির্দেশিকা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ঢাকা শহরের বাস্তবতায় এর বেশিরভাগই কাগজে-কলমে সুন্দর শোনালেও বাস্তবে কার্যকর নয়।
বলা হয় ‘ফাঁকা জায়গায় দাঁড়ান’। ফাঁকা জায়গা কোথায়? আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মাঠ নেই। যে মাঠ ছিল, তা এখন অ্যাপার্টমেন্ট। ভূমিকম্পের সময় কি আদৌ সে জায়গায় যাওয়া সম্ভব? আর গেলেও, সেই জায়গা কি হাজার মানুষের জন্য যথেষ্ট?
ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকম্পপ্রবণ শহরগুলোর একটি বলা হয়। গবেষকরা বলছেন— শহরের ৮০% ভবনের কোনো ভূমিকম্প-সহনশীল ডিজাইন নেই। অনেক রাস্তা এত সরু যে উদ্ধার গাড়ি প্রবেশই করতে পারবে না। পুরান ঢাকার ভবনগুলোর বড় অংশে আইনসঙ্গত নকশা ছিল না বা মানা হয়নি। নতুন ভবনেও নিয়ম না মানার অভিযোগ অসংখ্য। কিন্তু আমাদের সামাজিক সচেতনতা কোথায়?
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
আমরা জানি না বা জানলেও মানি না
• বাড়ি নির্মাণের আগে ভূমিকম্প সহনশীল ডিজাইন করা বাধ্যতামূলক।
• লোভে পড়ে বাড়ির পাশে ২–৩ ফিট খালি জায়গাও আমরা রাখি না।
• রাস্তা দখল করে দোকান, গ্যারেজ, গেট সবকিছুই আমরা গুঁজে দেই।
• খোলা জায়গা, খাল, ডোবা সব ভরাট করে ফেলি।
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
• বিল্ডিং কম্পন হলে লিফট ব্যবহার করা যাবে না এত সাধারণ জ্ঞানও অনেকে জানে না।
এখন ভাবুন, যদি বড় ভূমিকম্প হয়, আমাদের বাস্তবতা কী?
• ভবন ধসে পড়লে ফায়ার সার্ভিস ঢুকবে কীভাবে?
• ধ্বংসস্তূপে আটক মানুষ উদ্ধার করতে সময় লাগবে কত?
• পানির লাইন ভেঙে গেলে অগ্নিকাণ্ড হলে নেভাবে কী দিয়ে?
• হাজার হাজার মানুষ যদি একইসাথে রাস্তায় নামে, সেই রাস্তাই বা কতক্ষণ টিকে থাকবে?
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’
দুর্যোগ আমাদের হাতে নেই। ভূমিকম্প আমরা থামাতে পারব না। কিন্তু প্রস্তুতি আমাদের হাতে ছিল। সেই প্রস্তুতি আমরা নিইনি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও কি এই ভুলের শিকার হবে?
আমাদের এই উন্নয়নের নামে অন্ধ দৌড়, লোভ, এবং দায়িত্বহীনতার বড় মাশুল একদিন না একদিন দিতেই হবে। প্রকৃতি ভুল কখনও ভুলে যায় না, সময় হলে সেটার মূল্য সে আদায় করেই নেয়।
আমাদের সময়/কেইউ