ঘোড়াশালে ভূমিকম্প /
তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সাবস্টেশনে আগুন ও বিভিন্ন ভবনে ফাটল, নিহত ১
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে হওয়া ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সাবস্টেশনে আগুন লাগার পাশাপাশি একাধিক ভবনে ফাটল, দোকানপাটের মালামাল ভেঙে পড়ে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পলাশের মালিতা গ্রামে কাজম আলী (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
ভূমিকম্পের কম্পনের তীব্রতায় ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সাবস্টেশনে আগুন লেগে যায়। পলাশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এখনো ঘোড়াশালসহ পুরো পলাশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বিকল্প লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
ঘোড়াশাল বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, মুদি দোকান, জুতার দোকানসহ বিভিন্ন দোকানের তাক থেকে মালামাল ছিটকে মেঝেতে পড়ে ভেঙে গেছে। দোকানিরা আতঙ্কে দোকানঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় এবং মালামাল মাথায় পড়ে অনেকে আহত হয়েছেন।
ঘোড়াশাল বাজারের জুতার দোকানি আলম মিয়া বলেন, ‘ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব জুতা ও আসবাবপত্র ভেঙে পড়ে যায়। আমার প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
একই বাজারের মুদি দোকানি আসলাম মিয়া জানান, তার দোকানের কাচের জিনিসপত্র প্রায় সব ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে মনে হয়েছিল কেউ হামলা করছে। পরমুহূর্তে বুঝতে পারি এটা ভূমিকম্প। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’
ঘোড়াশাল ঈদগাহ রোডের মারকাসুল সুন্নাহ তাহফিজুল কুরআন সুন্নাহ মাদ্রাসার ছয়তলা ভবনে চার-পাঁচ জায়গায় ফাটল ধরেছে। মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি সালা উদ্দিন আনসারী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। আতঙ্ক এখনো কাটেনি।’
ভবনের মালিক আমানউল্লাহ জানান, ফাটল দেখে তিনি ভবনের সব দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। ভয়ে কোনো দোকানি দোকান খুলছেন না।
পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজের ভবনেও একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
নরসিংদী জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, তাদের কাছে রিখটার স্কেল না থাকায় ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে পলাশের মালিতা গ্রামে ভূমিকম্পের সময় দৌড়ে বের হওয়ার সময় বা দেয়াল ধসে পড়ে কাজম আলী নামে ৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
আমাদের সময়/আরডি