সুন্দর সমাপ্তির অপেক্ষায়
মিস ইউনিভার্স
থাইল্যান্ডে চলছে ৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তানজিয়া জামান মিথিলা। ‘মিস ইউনিভার্স’-এ এর আগে বাংলাদেশের কোনো প্রতিযোগীর বিজয়ী হওয়ার এতটা সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। তাই সবাই অপেক্ষায় আছেন এক সুন্দর সমাপ্তির। লিখেছেন- ফয়সাল আহমেদ
চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে নিজেকে এখন একদম শান্ত ও স্থির রাখছেন মিথিলা। নিজেকে মনে করাচ্ছেনÑ যা হওয়ার হবে, সেরাটা দেওয়াটাই তার দায়িত্ব। পিপলস চয়েসে ধারাবাহিক সাফল্য তাকে দিয়েছে আত্মবিশ্বাস। ভোটিংয়ে ওঠানামার মধ্যে মিথিলা বলেন, ‘এক নম্বরে ছিলাম একটা সময়। ভাবা যায়! আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, বাঙালিরা চাইলে কতটা এগোতে পারে।’ বুধবার শেষ হয়েছে পিপলস চয়েসের ভোট। পিপলস চয়েসে ১ নম্বরে থাকলে সরাসরি সেরা ৩০-এ পৌঁছে যাবেন মিথিলা। আজ ঘোষণা হবে চূড়ান্ত ফলাফল। মিথিলা জানালেন, ‘এটা একটা প্রতিযোগিতা। ফলাফল তো একটা আসবেই। ফলাফল যা-ই হোক আমি খুবই খুশি। কারণ দেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসছেÑ এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। এই পাওয়া নিয়েই আগামী পথচলা শুরু করব।’
মিথালার জন্য শুভ কামনা
মর্যাদাপূর্ণ সুন্দরী প্রতিযোগিতাটির মূল আসরে অংশ নিতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে মিথালা উড়াল দেন ২ নভেম্বর। ঢাকা ছাড়ার সময় কাছের বন্ধু ও পরিবার তাকে উৎসাহ দিয়েছে এবং মনোবল শক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করেই ব্যাংকক যান মিথিলা। এবার প্রতিযোগিতার শুরুতেই এত সাড়া পাবেন ভাবেননি। বললেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এভাবে সাপোর্ট করবেÑ এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। মনে হচ্ছে আমরা ভালো কিছু করব।’ মিস ইউনিভার্স ক্যাম্পে দুই সপ্তাহ কাটিয়েছেন মিথিলা। এই দুই সপ্তাহে শিখেছেন সময় ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা এবং নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরার কৌশল। বললেন, ‘এখানে অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে। সিস্টারহুড তৈরি করে কীভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হয়, শিখেছি। সবচেয়ে বড় বিষয়, মিস ইউনিভার্স আমাকে একটা নতুন মানুষ হিসেবে তৈরি করেছে। আমার যোগাযোগের দক্ষতা বাড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
জয়ী হলে
যদি জয়ী হন, তাহলে প্রথম পরিকল্পনা কী থাকবেÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে মিথিলার বলেন, ‘সবার আগে ক্ষুধামুক্তির জন্য কাজ করব। ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছি। তহবিলও সংগ্রহ করেছি। বিভিন্ন সংকটে মানুষকে ও বন্যার্তদের সহযোগিতা করেছি। পথশিশুদের জন্যও কাজ করেছি। আমার নিজের এলাকায়ও কাজ করেছি। মানুষ হিসেবে এসব করেছি। আর মিস ইউনিভার্স হলে আমার দেশ থেকে কাজ শুরু করব। আমি বিশ্বাস করি, চ্যারিটি স্টার্টস ফ্রম দ্য হোম।’
প্রতিযোগিতার বিজয়ী কী পান
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
মিস ইউনিভার্সের বার্ষিক বাজেট ১০০ মিলিয়ন ডলার। বিজয়ী হওয়ার পরবর্তী এক বছর মিস ইউনিভার্সের সব খরচ বহন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ। মিস ইউনিভার্সকে এক বছরের বেতন হিসেবে আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, টাকার অঙ্কে যা ৩ কোটির বেশি। বিজয়ীকে এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি মিস ইউনিভার্স সংগঠনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে দেওয়া হয়। বিজয়ীকে পরবর্তী এক বছর বাজার করা, রান্না, খাওয়া, পোশাক, প্রসাধনসামগ্রী বা অন্য কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ দেওয়া হয়। সেটিতে করে তিনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারেন। আগে থেকে কেবল মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। প্রতিটি সফরের হোটেল খরচ, খাওয়া, ফটোশুট বা প্রেস মিটিংয়ের আয়োজন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ।
মুকুটের মূল্য কত
২০২৪ সালে পুরোপুরি হাতে তৈরি মুকুটটিতে ব্যবহার করা হয়েছিল ফিলিপাইনের জাতীয় রত্ন হিসেবে পরিচিত দুর্লভ সোনালি মুক্তা। এর কেন্দ্রে ছিল একটি বড় সোনালি মুক্তা আর চারপাশে আরও ২২টি সোনালি মুক্তা, সঙ্গে ছিল বেশ কিছু প্রাকৃতিক হীরকখণ্ড। মুকুটটির মূল্য প্রায় ৫ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার বা ৬৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যিনি মিস ইউনিভার্স হবেন তিনি কেবল এক বছরের জন্য মুকুটটি নিজের কাছে রাখতে পারেন। পরের বছর তিনি নতুন বিজয়ীর মাথায় মুকুটটি পরিয়ে দেন। তবে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীকে পাকাপাকিভাবে একটি রেপ্লিকা মুকুট দেওয়া হয়। রেপ্লিকা বলে সেটির দামও নেহাত কম নয়, ১৫-২০ হাজার ডলার বা ১৮-২৪ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা