চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার, মীম হত্যার কারণ উদঘাটন হয়নি
পাঁচ বছর বয়সী শিশু আদিবা জাহান মীম হত্যার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই ইয়াসিন (১৭) গ্রেপ্তার হলেও হত্যাকাণ্ডের পেছনের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও কারণ এখনও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। গলায় সীমানা পিলার বাঁধা অবস্থায় মীমের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাতকের ধূর্ততা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় তীব্র জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন সীমানারপাড় গ্রামের আবু হানিফ মিয়ার মেয়ে মীম গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। দীর্ঘ ছয় দিনের খোঁজাখুঁজির পর গত ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার হয়। এ সময় শিশুটির গলায় একটি ভারী সীমানা পিলার শক্ত করে বাঁধা ছিল, যা দেখেই এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকায় মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ মীমের চাচাতো ভাই ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে। এরপরই সামনে আসে ঘাতকের চরম ধূর্ততার চিত্র।
জানা যায়, নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের পর পাষন্ড ইয়াসিন অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে শিশুটির দাফন-কাফনের পুরো প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। শুধু তাই নয়, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী যে বিশাল বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল, সেই শোক মিছিলেও ইয়াসিন সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে শোকের ভান করেছিল। এই পৈশাচিকতার প্রতিবাদে সীমানারপাড় থেকে বাঙ্গরা পর্যন্ত বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ মিছিলে অংশ নিয়ে ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণরত খুনী চাচাতো ভাই ইয়াসিন।ছবি: সংগৃহীত
মীমের মা জান্নাত আক্তার অভিযোগ করেছেন, ইয়াসিন তার ওপর প্রতিশোধ নিতে ব্যর্থ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। অন্যদিকে, বাবা আবু হানিফ মিয়া তার সন্তানের জন্য আনা ‘লাল লিপস্টিক’-এর বায়না স্মরণ করে আহাজারি করছেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘দ্রুত অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণ বা উদ্দেশ্য এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘নিহতের মা ব্যক্তিগত আক্রোশ ও লালসার অভিযোগ করলেও আমরা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত কারণ জানার চেষ্টা করছি।’
আমাদের সময়/আরআর