নিহতদের ৩ জন মাদারীপুর ২ জন মুকসুদপুরের
অবৈধপথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় গুলিতে নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে মাদারীপুরের ৩ যুবক রয়েছেন। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে নিহত হয়েছেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলারও দুই যুবক।
গত শনিবার রাতে লিবিয়ার উপকূলে ইউরোপগামী দুটি অভিবাসী নৌকা ডুবে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা ২৬ জন বাংলাদেশিকে বহনকারী একটি নৌকার যাত্রী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট।
মাদারীপুরের তিন যুবক হলেন ইমরান, মুন্না আর বায়েজিত। নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে গত ৮ অক্টোবর বাড়ি ছাড়েন মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের আদিত্যপুর গ্রামের ইমরান খান। মানবপাচার চক্রের সদস্য ও প্রতিবেশী শিপন খান সরাসরি ইতালি পৌঁছে দেবে বলে ২২ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। কিন্তু ইমরানকে লিবিয়া আটকে নির্যাতন করে পরিবার থেকে আরও ১৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়। শেষে ১ নভেম্বর লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করলে ভূমধ্যসাগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ইমরান। পরে মঙ্গলবার ইমরানের মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। একইভাবে ওই দিন ইমরানের সঙ্গে গুলিতে নিহত হন রাজৈর উপজেলার দুর্গাবদ্দী গ্রামের ইমারাত তালুকদারের ছেলে মুন্না তালুকদার, একই উপজেলার ঘোষলাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস শেখের ছেলে বায়েজিত শেখ। তিন যুবকের মৃত্যুর পর লাশ ফেলে দেওয়া হয় সাগরে।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন শিপন। এরপর আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে এলাকার যুবকদের খুব সহজে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেন তিনি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লিবিয়ায় গুলিতে তিন যুবকের নিহতের খবর বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দালালদের কোনো প্রকারেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষির ইউনিয়নের পশ্চিম লওখণ্ডা গ্রামের জাহিদ শেখের ছেলে আনিস শেখ ও আকোব আলী শেখের ছেলে এনামুল শেখ। এ ঘটনায় একই গ্রামের আরও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তারা হলেন, আওলাদ শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ হায়দার শেখের ছেলে ধলা শেখ, ইকরাম মীনার ছেলে দুলাল মীনা, হায়দার মীনার ছেলে আশিক মীনা, খালেক মোল্যার ছেলে সোহেল মোল্যা ও কাশালিয়া ইউপির গুনহর গ্রামের হাফিজ মীনার ছেলে নিয়াজ মীনা।
নিহত এনামুল শেখের পিতা আকোব আলী শেখ জানান, গত ১ মাস আগে ২১ লাখ টাকার বিনিময়ে মাদারীপুরের দালাল এনামুলের মাধ্যমে আমার ছেলেকে লিবিয়া পাঠাই। এক মাস পরে তাকে গেম দিয়েছে। ২১ লাখ টাকার বিনিময়ে আমার ছেলে লাশ হলো। সরকারের কাছে দাবি আমার ছেলের লাশটা দেশে আনতে ব্যবস্থা করে দিন।