ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ
সাভারের সব ইটভাটায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের প্রতিবাদ ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইট ভাটার শ্রমিক ও মালিকরা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিন অবরোধের কারণে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকে যান চলাচল। এতে মহাসড়কের উভয় লেনে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তির কবলে পড়েন সড়ক ব্যবহারকারীরা। বিশেষ করে আটকে পড়া নারী ও শিশুদের পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিন বাজারের অদূরে ভাঙা ব্রিজ এলাকায় সড়ক অবরোধের পাশাপাশি বিক্ষোভে যোগ দেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকরা।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাইওয়ে পুলিশ। আটকে পড়া যাত্রীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় অবরোধ সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন তারা।
এরপর বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নিলে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
সাভার হাইওয়ে থানার ওসি সালেহ আহমেদ জানান, ইটভাটা সচল রাখার দাবিতে ভাটার মালিক-শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে মহাসড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।
জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান একটি পরিপত্র জারি করেন।
ওই পরিপত্রে বলা হয়, সাভারের বায়ুমানের বার্ষিক গড় মাত্রা জাতীয় নির্ধারিত মানমাত্রার প্রায় তিন গুণ বেশি। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত বায়ু সাভারের এই দূষণকে ঢাকায় নিয়ে আসে, যা রাজধানীর মানুষের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
সাভার ও ঢাকা উভয় অঞ্চলের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিবর্তনের পাশাপাশি এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ঘোষণার ফলে টানেল ও হাইব্রিড হফম্যান কিলন ছাড়া অন্য সব ধরনের ইটভাটায় ইট পোড়ানো ও প্রস্তুত কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া উন্মুক্ত স্থানে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো এবং বায়ুদূষণকারী নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য অবস্থানগত ও পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়।
প্রসঙ্গত, বায়ুদূষণ গুরুতর আকার ধারণ করায় দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্দিষ্ট এলাকা হিসেবে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এর ফলে সেপ্টেম্বর মাস থেকেই সাভারের সব ইটভাটায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় অনিশ্চিতার মুখে পড়েন ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা।
আমাদের সময়/আরআর