জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল মেক্সিকো
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শাইনবমের সরকারের বিরুদ্ধে মেক্সিকো সিটিতে জেন-জিদের বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় অন্তত ১২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ কর্মকর্তা। এই বিক্ষোভে বিরোধী দলগুলোর বয়স্ক সমর্থকরাও যোগ দেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
১ নভেম্বর মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো মিশোয়াকান রাজ্যের উরুয়াপান শহরের মেয়র কার্লোস আলবার্তো মানজো রদ্রিগেজকে হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা মেয়রের সাহসিকতার প্রশংসা করে এবং সরকারের কাছে আরও ভালো নিরাপত্তা দাবি করে। ২৫ বছর বয়সী তরুণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রবীণ নাগরিকরা, সবাই এই আন্দোলনে শামিল হয়। তাদের হাতে ছিল ‘জলদস্যু মাথার খুলি’ পতাকা।
বিক্ষোভকারীরা শাইনবমের বাসভবন ও কর্মস্থল ন্যাশনাল প্যালেসের সামনে জড়ো হয় ও সুরক্ষাবলয় ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলে, ‘এভাবেই তোমাদের কার্লোস মানজোকে রক্ষা করা উচিত ছিল।’ যদিও প্রেসিডেন্ট শাইনবমের জনপ্রিয়তার হার ৭০%-এর বেশি, তবুও বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল হত্যাকাণ্ডের কারণে তার নিরাপত্তানীতি সমালোচিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
বিক্ষোভের আগে শাইনবম অভিযোগ করেন, ডানপন্থি দলগুলো জেনজি আন্দোলনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে ও সামাজিক মাধ্যমে ‘বট’ ব্যবহার করে জনসমাগম বাড়াচ্ছে। তিনি এটিকে ‘বিদেশ থেকে প্রচারিত আন্দোলন’ বলে অভিহিত করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই বিক্ষোভ কেবল একটি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ নয়, বরং এটি সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করা কর্মকর্তাদের সুরক্ষা দিতে সরকারের ব্যর্থতার প্রতি যুবসমাজ ও বিরোধীদের সম্মিলিত হতাশার বহিঃপ্রকাশ। শাইনবমের সরকার নিরাপত্তা সংকট মেনে না নিয়ে, অবিলম্বে বিদেশি অনুপ্রবেশের দিকে আঙুল তোলায় পরিস্থিতি আরও জটিল ও রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়ে উঠেছে।
মেক্সিকোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হতে পারে। সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা। প্রেসিডেন্ট শাইনবমকে অবশ্যই কেবল অনুপ্রবেশের অভিযোগ না করে, কার্যকর নিরাপত্তানীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
উচ্চ রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও, নিরাপত্তা সংকট সমাধানে ব্যর্থ হলে এ ধরনের প্রতিবাদ আরও ব্যাপক ও সহিংস রূপ নিতে পারে, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস