দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিইআরসির জনবল কাঠামো অনুমোদন
দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সংশোধিত জনবল কাঠামো অনুমোদন করা হয়েছে। ২০১৭ সালের প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিইআরসি ২৮১ পদের প্রস্তাব করলেও বিদ্যমান ৮১ পদের সঙ্গে নতুন ৬৫ পদ অনুমোদন দিয়েছিল সচিব কমিটি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩৬ জন, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ২০ জন এবং পরের বছরে ৯ জনকে নিয়োগের শর্তে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিইআরসি সূত্রে জানা যায়।
বিইআরসির অর্গানোগ্রাম নিয়ে প্রায় আট বছর ধরে চলছে চিঠি চালাচালি। দ্বিতীয় দফায় চিঠি পাঠানোর পর অনুমোদন দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। আগের দফায় অনুমোদন না দিয়ে পদ সৃজনের প্রাসঙ্গিকতার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। বিগত সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তখনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেছেন, জনবল কাঠামো প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন দিয়েছেন, এখন প্রক্রিয়াগত কিছু বিষয় রয়েছে। এগুলো শেষ হলে আমরা লোকবল নিয়োগ দিতে পারব।
বিইআরসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, লোকবলের অভাবে আইনি দায়িত্ব পালন করা যাচ্ছিল না। ২০০৩ সালে বিইআরসি আইন হওয়ার পর অনেক পরিবর্তন এসেছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বিইআরসির সাবেক সদস্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবু ফারুক বলেছেন, বিইআরসিকে কার্যকর করা গেলে জ্বালানি খাতের অর্ধেক সংস্কার হয়ে যাবে। আইন অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেওয়া গেলে অনেক দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। ভারতসহ অনেক দেশে কোনো চুক্তি করতে হলে রেগুলেটরি কমিশনের অনুমোদন নিতে হয়। আমাদের দেশেও যদি করা যায়, তা হলে তারা দেখবে সেটির আদৌ প্রয়োজন কিনা, দর যৌক্তিক কিনা; দেশের স্বার্থ থাকলে তারা অনুমোদন দেবে। এতে ম্যাক্রো লেভেলে হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।
জনবল কাঠামো ঝুলে থাকায় বিইআরসিতে এক ধরনের স্থবিরতা ও অসন্তোষ বিরাজ করছিল। একই পদে বছরের পর বছর পড়ে থাকায় অনেকের মধ্যে হতাশা ছিল। আইন অনুযায়ী সহকারী পরিচালক পদে ১০ বছর কাজ করার পর উপপরিচালক পদে প্রমোশন হওয়ার কথা। কিন্তু ১৩ বছর হয়ে গেলেও প্রমোশন হচ্ছে না। যে কারণে কমিশনে অনেক কর্মকর্তার মধ্যে হতাশা ছিল। জনবল কাঠামো অনুমোদন হওয়ায় সেই স্থবিরতা দূর হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান প্রথম কর্মদিবসেই অনেক বিষয়ে পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। ঘোষণা দেন, বিশেষ বিধান আইন বাতিল, নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয় না করার। তাঁর ওই ঘোষণা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয় করার ধারা বিলুপ্ত করা হয়। তবে উদ্যোগ নেওয়া অনেক সংস্কারই এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?