বিবিসির বিরুদ্ধে ট্রাম্প আইনি পদক্ষেপ নেবেনই

বিবৃতি বিকৃতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০
শেয়ার :
বিবিসির বিরুদ্ধে ট্রাম্প আইনি পদক্ষেপ নেবেনই

বিভ্রান্তিকর বিবৃতি সম্পাদনার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরও বিবিসির বিরুদ্ধে একশ কোটি থেকে পাঁচশ কোটি মার্কিন ডলারের মামলা করার কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

২০২১ সালের ক্যাপিটল দাঙ্গা নিয়ে প্রচারিত ‘প্যানোরমা’ নামক একটি পর্ব থেকে এই বিতর্কের সূত্রপাত, যা বিবিসিতে নজিরবিহীন সংকটের সৃষ্টি করে। বিতর্কের জেরে বিবিসির সর্বোচ্চ দুই কর্মকর্তা- মহাপরিচালক টিম ডেভি ও সংবাদ বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস- পদত্যাগ করেছেন।

বিতর্কিত সম্পাদনায় ট্রাম্পের ক্যাপিটল আক্রমণের প্রাক্কালের ভাষণটিকে এমনভাবে দেখানো হয়েছিল, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ের বক্তব্যকে একত্রিত করে তাৎক্ষণিক সহিংসতা উসকে দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। প্রকৃত বক্তব্যে ‘সিনেটরদের উল্লাস জানানোর’ কথা বলার প্রায় পঞ্চাশ মিনিট পরে ট্রাম্প ‘নরকের মতো লড়াই করার’ কথা বলেছিলেন। এই ভুলটি তুলে ধরা হলে বিবিসি চেয়ারম্যান সামির শাহ ক্ষমা চান এবং এটিকে ‘ভুল’ বলে স্বীকার করেন। বিবিসি অনুষ্ঠানটি আর না দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যদিও বিবিসি ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী ক্ষমা চেয়েছে, তবে তারা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিবিসি তাদের আইনি অবস্থান তুলে ধরে বলেছে, যেহেতু অনুষ্ঠানটি শুধু যুক্তরাজ্যেই দেখানো হয়েছিল এবং ঘটনার পরে ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাই মানহানির ভিত্তিতে মামলা করার কোনো আইনি ভিত্তি নেই। তবে ট্রাম্প তার এই পদক্ষেপ থেকে সরছেন না।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা কেবল বিবিসির সম্পাদকীয় অখণ্ডতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেনি, বরং বৈশ্বিক গণমাধ্যমে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প এই বিতর্ককে ‘ভুয়া খবর’ তাঁর নিজস্ব বয়ান শক্তিশালী করতে ব্যবহার করছেন, এটিকে ‘দুর্নীতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

ট্রাম্প অতীতে টুইটার (এখন এক্স), ফেসবুক ও ইউটিউবের বিরুদ্ধে অনুরূপ মামলায় বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন, যা তিনি হোয়াইট হাউসে একটি বলরুম ও তাঁর প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরির জন্য ব্যবহার করছেন। এই আইনি পদক্ষেপ সম্ভবত গণমাধ্যম, রাজনীতি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের এক জটিল সমীকরণকে তুলে ধরছে।