বিশ্বকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে ইসরায়েল
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজায় সাহায্য সরবরাহের ওপর ইসরায়েলের ক্রমাগত বিধিনিষেধ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সংস্থাটির উপকমিশনার জেনারেল নাটালি বাউকলি ব্রাসেলসে এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো জরুরি, কারণ শীতের মুখে গাজার জনসংখ্যা খাদ্য ও জীবনরক্ষাকারী পণ্যের তীব্র সংকটে রয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
বাউকলি জানিয়েছেন, ইউএনআরডব্লিউএর কাছে ছয় হাজার ট্রাকের সমতুল্য খাদ্য, তাঁবু ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রস্তুত রয়েছে। এই সরবরাহ গাজার সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য প্রায় তিন মাসের খাদ্য সরবরাহ করতে সক্ষম। কিন্তু ইসরায়েলের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এই বিশাল পরিমাণ সাহায্য জর্দান ও মিশরে আটকে আছে। তার মতে, গাজার জন্য দৈনিক যে ৫০০-৬০০ ট্রাক সাহায্য প্রয়োজন, তার ‘অর্ধেকও’ প্রবেশ করতে পারছে কিনা সন্দেহ।
বাউকলি ইসরায়েলকে একটি দখলদার শক্তি হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তারা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন মেনে চলছে না। তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদাতের একটি পরামর্শমূলক মতামতের কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের ‘দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য সরবরাহ’ ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে এবং ইউএনআরডব্লিউএর সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
গাজাকে ভাগ করার ছক : এদিকে মার্কিন সামরিক নথি অনুযায়ী গাজাকে দীর্ঘমেয়াদে দ্বিধাবিভক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। এর একটি অংশ হবে আন্তর্জাতিক ও ইসরায়েলি সামরিক নিয়ন্ত্রিত ‘গ্রিন জোন’, যেখানে পুনর্গঠন শুরু হবে। অন্য অংশটি, যেখানে প্রায় সব ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত, তা ধ্বংসপ্রাপ্ত ‘রেড জোন’ হিসেবে থাকবে।
দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এই পরিকল্পনা গাজায় ফিলিস্তিনি শাসন প্রতিষ্ঠার মার্কিন প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, পরিকল্পনাটি বিশৃঙ্খল ও দ্রুত পরিবর্তনশীল। একটি স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কার্যকর সমাধান না থাকায় বিভক্ত গাজা দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা, সীমিত পুনর্গঠন এবং স্থায়ী সংঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
অন্যদিকে ভ্রমণ নথি ছাড়া চার্টার্ড ফ্লাইটে ১৫৩ জন ফিলিস্তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে পৌঁছানোর পর প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কেনিয়া হয়ে আসা এই যাত্রীদের ১২ ঘণ্টা বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৯ হাজার। ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকেও অব্যাহত হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৪৫ জন ফিলিস্তিনি।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস