অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন মহুয়া রউফ
ভ্রমণসাহিত্যে নতুন আঙ্গিক, ভাষাশৈলী ও বিশ্ব-অভিযাত্রার অনন্য অন্তর্দৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে ভ্রমণবিষয়ক লেখক ও ভূপর্যটক মহুয়া রউফ পেয়েছেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪৩২। দেশের শীর্ষস্থানীয় নারীভিত্তিক ম্যাগাজিন পাক্ষিক অনন্যা নারীর সাহিত্যসৃজনকে সম্মান জানিয়ে এ পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে আয়োজিত এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্ব পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ড. তানজিনা হোসেন এবং কবি-গবেষক পিয়াস মজিদ। তারা মহুয়া রউফের ভ্রমণগদ্যের শিল্পরূপ, অনুসন্ধিৎসা ও মানব-সভ্যতার ভেতর দিয়ে ভ্রমণের দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করেন।
তাসমিমা হোসেন বলেন, এই প্রথম অনন্যা ভ্রমণবিষয়ক লেখককে পুরস্কৃত করল। বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে খুব কম এমন লেখিকা পাওয়া যাবে। ভ্রমণ নিয়ে লেখায় মহুয়া নতুন আঙ্গিক এনেছেন। তাঁর লেখনিতে প্রাঞ্জল ভাষাশৈলী ও গভীর জ্ঞান দারুণভাবে উঠে এসেছে।
ড. তানজিনা ও পিয়াস মজিদ বলেন, মহুয়া রউফ তাঁর প্রথম বই ‘দখিন দুয়ার খোলা’তে অ্যান্টার্কটিকার দুর্গম অভিযাত্রার রোমাঞ্চকে তুলে এনেছেন নতুন দৃষ্টিতে। দ্বিতীয় বই ‘লাতিনের নাটাই’ পাঠককে নিয়ে গেছে মায়া-ইনকা সভ্যতার বিস্ময়, নেরুদার কবিতার সুর আর লাতিন সংস্কৃতির প্রাণচাঞ্চল্যের ভেতরে। তাঁর ভ্রমণগদ্য মানুষের জীবন, ইতিহাস, প্রকৃতি আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক নবতর আলোকরেখা। এভাবে তিনি বাংলা ভ্রমণসাহিত্যকে দিয়েছেন কৌতূহলোদ্দীপক ভিন্নতর বৈশিষ্ট্য।
মহুয়া রউফ বলেন, আমি বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে বাঙালি, কিন্তু নিজেকে আমি বিশ্বনাগরিক মনে করি। আমি মনে করি, অ্যামাজনের গহিন বনেও আমার হিস্যা আছে। মরুভূমির ধু ধু প্রান্তরেও আমার হিস্যা আছে। কিশোর বয়সেই আমি মনেপ্রাণে স্বপ্ন দেখেছি, বিশ্বকে ঘুরে দেখতে হবে।
এর আগে অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকের ওপর তাপস কুমার দত্ত নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। পরে তাঁকে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য নারী সাহিত্যিকদের ১৯৯৩ সাল (বাংলা ১৪০১ সন) থেকে ৩২ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ছায়ানটের বার্ষিক লোকসংগীত আসর
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ইতিহাসে, স্মৃতিতে’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লেখা ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ইতিহাসে, স্মৃতিতে’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান ও আলোচনাপর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বইটির প্রকাশনা উপলক্ষে এ আলোচনাপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গলবুকসের উদ্যোগে এতে অতিথি আলোচক হিসেবে ছিলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম; বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও অনুবাদক অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস; বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব, লেখক ও অনুবাদক খায়রুল আলম সবুজ; কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
আলোচকরা বইটি নিয়ে বলেন- ইতিহাসে, স্মৃতিতে বইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা, বিকাশ ও সমাজ-রাজনীতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে এক গভীর বিশ্লেষণ। লেখক এখানে ব্যক্তিগত স্মৃতি ও ঐতিহাসিক তথ্য তুলে ধরেছেন নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে। এতে রয়েছে ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতি, রাষ্ট্রচেতনার বিকাশ ও বুদ্ধিজীবী সমাজের গতিপথের স্পষ্ট অনুধাবন।
আরও পড়ুন:
বরিশালে ৯ ছাগলের সাজা মওকুফ