প্রধান শিক্ষক-ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইস বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদ ও দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ওই ছাত্রীকে ফ্লাইং কিসও দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদ।
গতকাল শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি এখন গাংনীর টক অফ দা টাউন।
স্থানীয়রা জানান, একজন প্রধান শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর তার চরিত্র যদি এমন হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষাটা পাবে কোথা থেকে। আর এই ভিডিও যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে তখন তো ওই প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষার্থীরা দেখছে। আর ওই শিক্ষকের লজ্জা শরম যদি থাকে, তাহলে কখনোই ওই স্কুলে প্রবেশ করবে না। তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। এমন অসভ্য নোংরা মানুষ কখনোই শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘ভিডিওতে দেখা যায় নির্লজ্জ ওই শিক্ষার্থী তার ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখাচ্ছে আর নির্লজ্জ ওই শিক্ষক তাকে অশ্লীল ভঙ্গিতে চুমা দিচ্ছে। একজন শিক্ষক আর ছাত্রীর এমন ভিডিও দেখে নিজেরই লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে। আমাদেরও সন্তান আছে তারাও দেখছে। তবে আমরা এগুলো শুধু বিচার চাই। আসলে সঠিক বিচার কখনোই দেখতে পাই না।’
এইস বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তরিকুল ইসলাম নামের এক সাবেক শিক্ষার্থী জানান, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি পবিত্র জায়গা। এই জায়গাটা যথাযথ মর্যাদা দিয়ে চলা উচিত প্রতিটা শিক্ষকের। কিন্তু এভাবে অনৈতিক ঘটনা আসলে কিসের বার্তা দেয়। আগামী প্রজন্ম কি শিখবে এ শিক্ষকের কাছ থেকে। তাই এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’
বিষয়টি জানতে এইস বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদ এর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হাড়াভাঙ্গা এইসবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোখলেসুর রহমান বলেন, আমি ব্যক্তিগত কাজ একটু বাইরে আছি।তবে ভিডিওটি দেখেছি,এটা খুব দুঃখজনক।আমার সাথে স্থানীয় ও সহকারী শিক্ষকদের কথা হয়েছে।আমি এসে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।
গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ‘হাড়াভাঙ্গা এইস বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ভিডিও আমরা দেখেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আমি ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে বলেছি তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার জন্য।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিষয়টি জেনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আমাদের সময়/আরআর