মুকুট জয়ের পর আলো ছড়িয়েছেন যাঁরা

এশিয়া থেকে মিস ইউনিভার্স

ফয়সাল আহমেদ
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫
শেয়ার :
মুকুট জয়ের পর আলো ছড়িয়েছেন যাঁরা

মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিবছর সারাবিশ্ব থেকে একজন সুন্দরী নির্বাচন করা হয়। সৌন্দর্য ও গুণসম্পন্ন নারী নির্বাচনের অন্যতম বড় এ আসর যাত্রা করে ১৯৫২ সালে। যুগের সঙ্গে নানা রূপ বদলালেও বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী প্রদর্শনী হয়ে উঠেছে এটি। এশিয়া থেকে এ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়ে একাধিক সুন্দরী মিস ইউনিভার্স খেতাব জিতেছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের পরিচিতি তুলে ধরা হলো। লিখেছেন ফয়সাল আহমেদ

এশিয়া থেকে প্রথম আকিকো কোজিমা

প্রথম এশিয়ান হিসেবে ১৯৫৯ সালে ২২ বছর বয়সে মিস ইউনিভার্স জিতে নেন জাপানের এ সুন্দরী। অন্যদের চেয়ে গড় উচ্চতায় কিছুটা খাটো হলেও মেধা ও রূপে এ পুরস্কার জয় করেন তিনি।

১৮ বছর বয়সে খেতাব জয়ী অপস্রা হংসাকুলা

এশিয়ার দ্বিতীয় মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ডের এ লাবণ্যময়ী। ১৯৬৫ সালে এ খেতাব জেতেন তিনি। মাত্র ১৮ বছর বয়সে মেধা ও সৌন্দর্য দিয়ে বিচারকদের মন জয় করেন এ টিনএজার।

ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে প্রথম সুস্মিতা সেন

‘মিস ইন্ডিয়া’ হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে প্রথম নারী হিসেবে ১৯৯৪ সালে মিস ইউনিভার্স পুরস্কার জয় করেন সুস্মিতা সেন। জগৎ ভোলানো হাসি দিয়ে দর্শকদের মন জয় করা এ বলিউড অভিনেত্রী অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দেন। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন, সে বছর ঐশ্বরিয়া থাকলে তাদের জয়ী হওয়ার সুযোগ নেই ভেবে অন্তত ২৫ জন সুন্দরী মডেল তাদের নাম সরিয়ে নিয়েছিলেন ‘মিস ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতা থেকে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্মিতা সেনও ‘মিস ইন্ডিয়া’ সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নিজের নাম রেজিস্ট্রেশন করা থেকে পিছু হটেন। তখন তার মা সুস্মিতাকে বলেন, ‘চেষ্টা না করেই হাল ছেড়ে দিলে তুমি? তোমার যদি মনে হয়, ঐশ্বরিয়া খুব সুন্দরী, সেই জিতবে, তাহলে তার কাছে হারতে অসুবিধা কোথায়?’ মায়ের কথায় সুস্মিতা ‘মিস ইন্ডিয়া’য় প্রতিযোগী হিসেবে নিজের নাম রেজিস্ট্রেশন করেন। ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে এক মঞ্চে সেরা হওয়ার জন্য লড়াই করেন। এর পরই ঘটে অবাক করা ঘটনা! সবাইকে হতবাক করে দিয়ে ঐশ্বরিয়াকে হারিয়ে বিজয়ী হন সুস্মিতা। এবং পরে জিতে নেন মিস ইউনিভার্স খেতাব।

হলিউডের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন লারা দত্ত

সুস্মিতার পর বছর ছয়েক বাদেই ২০০০ সালে ভারত থেকে আরেক সুন্দরী মিস ইউনিভার্স খেতাব লাভ করেন। অগ্রজের মতো অনুজও বলিউডে অভিনয় শুরু করেন। এক পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে বলিউডের আগেই হলিউডের দ্য ম্যাট্রিক্স ফ্র্যাঞ্চাইজির একটি ছবিতে অভিনয়ের অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি! কেন? লারা বলেন, ‘সে সময় খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বলিউডে ডেব্যু করিনি। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই আমি জানতাম যে ক্যারিয়ারে আমি কী করতে চাই। তখন মা অসুস্থ ছিলেন তাই তাঁর কাছে থাকাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুবার না ভেবেই সোজা হলিউড থেকে ভারতে ফিরে এসেছিলাম। বলিউডে ডেব্যু করব বলে ফিরে আসিনি। শুধু মায়ের পাশে থাকতেই ফিরে এসেছিলাম।’

নাটকের পর মিস ইউনিভার্স পিয়া আলোনজো

২০১৫ সালে মিস ইউনিভার্স হয়েছেন ফিলিপাইনের পিয়া আলোনজো ওয়ারৎজব্যাচ। তবে ভুলক্রমে মিস ইউনিভার্স হিসেবে প্রথম নাম ঘোষণা করা হয়েছিল মিস কলম্বিয়া আরিআন্দা গুতিয়েরজার নাম। এ ঘটনা রীতিমতো এক নাটকের জন্ম দেয়। ওই অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন কৌতুকাভিনেতা স্টিভ হার্ভে। তিনি তাঁর হাতে থাকা কিউ কার্ড পড়তে গিয়ে ভুল করে বসেন এবং বিজয়ী হিসেবে আরিআন্দা গুতিয়েরজার নাম ঘোষণা করেন। শিগগিরই উপস্থাপক হার্ভে তাঁর ওই ঘোষণার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। প্রথম রানারআপ হয়েছেন মিস কলম্বিয়া। আর মিস ইউনিভার্স হয়েছেন মিস ফিলিপাইন।’

২১ বছর পর ভারতে মুকুট আনেন হারনাজ কৌর সান্ধু

‘মিস ইউনিভার্স ২০২১’ হারনাজ কৌর সান্ধু। বলিউড অভিনেত্রী লারা দত্তের (২০০০) পর হারনাজের হাত ধরে ২১ বছর পর ‘মিস ইউনিভার্স’-এর মুকুট এসেছে ভারতে। মিস ইউনিভার্স হওয়ার আগেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন হারনাজ। অভিনয় করেছেন পাঞ্জাবি ছবিতে। বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দাতেও কাজ করছেন এই সুন্দরী। কালারস চ্যানেলে প্রচারিত ‘উধারিয়া’ সিরিয়ালের মধ্য দিয়ে ছোটপর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। টাইগার শ্রফ অভিনীত তাঁর প্রথম ছবি ‘বাঘি ৪’ দিয়ে বলিউডে পা রাখছেন। মিস ইউনিভার্স জয়ের পর ওজন বৃদ্ধির জন্য সমালোচনা এবং বডি-শেমিংয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সবকিছুকে ছাড়িয়ে ‘বাঘি ৪’ সিনেমায় তাঁর বিশাল পরিবর্তন সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।