কে হচ্ছেন ধানের শীষের কাণ্ডারি
মাঠে জামায়াতের মাসুদ ও এনসিপির শাহিন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। সেই তালিকায় নেই পটুয়াখালী-২ (বাউফল)। ফলে এই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী কে হবেন তা জানতে আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও আশা নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির সম্ভাব্যপ্রার্থী সাবেক এমপি শহিদুল আলম তালুকদার, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মু. মুনীর হোসেন এবং সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফারুক আহমেদ তালুকদার। এমন অবস্থায় এই আসনের ভোটাদের প্রশ্ন- কে হতে যাচ্ছেন পটুয়াখালী-২ আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারি?
বিএনপির তিন মনোনয়নপ্রত্যাশী ও তাদের অনুসারীরা ৩১ দফা প্রচারের আড়ালে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে পৃথক কর্মসূচি করছেন। বিশেষ করে গত ২৮ অক্টোবর যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবসের কর্মসূচি পৃথক ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় নেতারা জানান, দ্রুত একক প্রার্থী ঘোষণা না হলে এই অনৈক্য দিন দিন বাড়বে। আবার একক প্রার্থী ঘোষণা হলেও তিন নেতার ঐক্য না হলে জাতীয় নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে। যার সুবিধা নেবে জামায়াতে ইসলামী।
স্থানীয় নেতারা জানান, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মু. মুনির হোসেন। জনপ্রিয়তায়ও তিনি এগিয়ে। তার বাবা আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক, ফলে উপজেলা বিএনপির বহু নেতা তার পক্ষে রয়েছেন। মুনির হোসেন বলেন, কিশোর বয়স থেকে বিএনপির রাজনীতিতে আছি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছি।
একসময় এ আসন আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শহিদুল আলম তালুকদার আওয়ামী লীগের সেই ঘাঁটি ভেঙে জয়লাভ করেন। তার জনপ্রিয়তাও তৃণমূল পর্যন্ত। শহিদুল আলম এবং তার স্ত্রী সালমা আলম উভয়েই মাঠে আছেন। আইনি জটিলতায় ২০১৮ সালে শহিদুল আলম নির্বাচন করতে পারেননি। সেই সময় বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তার স্ত্রী সালমা আলম। স্থানীয় নেতারা জানান, শহিদুল আলম শারীরিকভাবে অসুস্থ, তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার স্ত্রী মনোনয়ন চাইবেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাউফল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফারুক আহমেদ তালুকদারও মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব, না দিলে যাকে মনোনয়ন দেবে তাকেই সমর্থন করব। আমি মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতি করি, ব্যক্তিস্বার্থের জন্য নয়।’
এদিকে এ আসনে জোট রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। তার বাবা বর্তমানে জামায়াত ইসলামী বাউফল উপজেলার আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ আসনে জামায়াত ইসলামী মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে। তিনি বলেন, আশা করি এবার এলাকার জনগণ সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দেবে। লেভেল প্লেইং ফিল্ড বা নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি এ আসনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই পীর)-এর প্রার্থী হিসেবে মুফতি আব্দুল মালেক আনোয়ারী ইতোমধ্যেই নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।