অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই বিচারকের ছেলের মৃত্যু

রাজশাহী ব্যুরো
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:২৫
শেয়ার :
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই বিচারকের ছেলের মৃত্যু

রাজশাহীতে নিজের ফ্ল্যাটে ছেলে তাওফিক রহমান সুমন (১৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে । শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর রাজপাড়া থানায় বিচারক আবদুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে লিমন মিয়াকে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ লিমনকে আটক করে। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে তারা সে মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও কমিশনার গাজীউর রহমান জানান, আসামি লিমন মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা যাবে।

এদিকে শুক্রবার নিহত তাওফিক রহমানের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে তার মরদেহ ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক কফিল উদ্দিন এবং প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। এসময় মর্গের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা বিচারক আব্দুর রহমান। ময়নাতদন্ত শেষে অধ্যাপক কফিল উদ্দিন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার কফিল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান , ধারালো ও চোখা অস্ত্রের আঘাতে শরীরের তিনটি স্থানে রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ঘটে। এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছিল সুমনের। এতে তার মৃত্যু হয়।

অধ্যাপক কফিল উদ্দিন আরও জানান, তাওসিফের ডান ঊরু, ডান পা ও বাম বাহুতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। এসব স্থানে গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালি কেটে যাওয়ায় বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ঘটে। এই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই তার মৃত্যুর প্রধান কারণ।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে তাওসিফের গলায় কালশিরার দাগের উল্লেখ থাকলেও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেন, ‘নরম কিছু দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা থেকে এমন দাগ তৈরি হতে পারে। তবে এটি মৃত্যুর মূল কারণ নয়। বরং, ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং শ্বাসরোধের চেষ্টা একই সময়ে হয়েছে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর ডাবতলা এলাকায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র তাওশিফ রহমান সুমনকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটে। একই ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীও (৪৪) গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে লিমন মিয়া (৩৫) নামে একজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সময় ধস্তাধস্তিতে আহত হওয়ায় তিনিও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদোনেরপাড়া গ্রামের হেমায়েত মিয়া সোলায়মান শাহিদের ছেলে।

এদিকে, বিচারক আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর ডাবতলা এলাকায় স্পার্ক ভিউ নামের ওই ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনের তাওসিফের মরদেহ দাফনের জন্য নিজ গ্রামের বাড়ি জামালপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন বিচারক আব্দুর রহমান।

আমাদের সময়/আরডি