মেয়ের বিয়ের আগে বাবা গ্রেপ্তার
বিয়ের দিন তারিখ ঠিক বাজার সদায়ের প্রস্তুতি ডেকোরেশনসহ যাবতীয় কাযর্ক্রম সম্পূর্ণ। বিয়ের সানাই বাজার ঠিক আগ মূহুর্তে বেজে উঠলো বিরহের সানাই। সমস্ত বিয়ের আয়োজন যেন মুখ থুবড়ে পড়ল। দিশেহারা হয়ে পড়ল পরিবারের সব সদস্য। হঠাৎ করেই মধ্যরাতে পুলিশ এসে মেয়ের বাবাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ায় সব আয়োজনে যেন ভাটা পড়ল। এমন ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া গ্রামে।
এলাকাবাসীর দাবি, কোনো ধরনের মামলা মোকদ্দমা না থাকলেও সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কৃষক খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাশকতার পরিকল্পনাকারী হিসেবে চারজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশের দাবি আটক ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নাশকতার পরিকল্পনাকারী। আটকদের মধ্যে খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তির মেয়ের বিয়ে (১৪ নভেম্বর) শুক্রবার।
স্থানীয়রা জানান, এক ছেলে দুই মেয়ের জনক খলিল। ছেলে বিদেশে থাকে, বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য ব্যাপক আয়োজন করেছেন তিনি। প্রায় তিন শতাধিক দাওয়াতি লোকের খাওয়ার আয়োজন ও মেয়ে বিদায়ের টেনশনে ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই তাকে মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ আটক করে। পরে পুলিশ জানায় খলিলকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বিয়ের আয়োজনে যেন শোকের ছায়া পড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে ভরনিয়া এলাকায় খলিলের বাড়ীতে গেলে দেখা যায়, স্থানীয় ও আত্মীয় স্বজনদের সহায়তায় ডেকোরেটর সাজানোর কাজ চলছে। তবে বিয়ের আয়োজনের কাযর্ক্রম চললেও সবার মন যেন হতাশায় ভুগছে। অভিভাবকহীন বিয়ের আয়োজনে যেন কনেরও ব্যাপক মন খারাপ।
সেখানে কথা হয় খলিলের স্ত্রী নাজমার সঙ্গে। তিনি জানান, তার স্বামী কোনো ধরনের রাজনীতি করতেন না। তিনি কৃষক শ্রেণীর মানুষ। জায়গা জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে সব জেনেও স্থানীয় কয়েকজন খারাপ লোক তার স্বামীকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে মেয়ের বিয়ের আয়োজন পন্ড করতেই এমন কাজ করেছে। তার স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ তাকে দ্রুত জামিন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
প্রতিবেশী বেলাল বলেন, ‘খলিল কোনো রাজনীতিতে সেভাবে জড়িত ছিলেন না। তাকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মেয়ের বিয়ের আগে বাবাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে পুলিশ ব্যাপক অমানিবক আচরণ করেছেন।’
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক বলেন, ‘সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আমাদের সময়/আরডি
