সংশোধিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির পরিবর্তন হচ্ছে
বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করে যাবে অন্তর্বর্তী সরকার : অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, চলমান ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি রাজস্ব ঘাটতি, পে-স্কেল বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তা ও খাদ্যনিরাপত্তা ইস্যুতেও কথা বলেন।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিকবিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন বাজেট দিয়েছিলাম, তখন বাস্তবতার নিরিখেই দিয়েছিলাম। সংশোধিত বাজেটে বিরাট ব্যত্যয় ঘটবে, তা কিন্তু না। তবে কিছু বিষয়ে সমন্বয় আনতে হচ্ছে।’
উপদেষ্টা জানান, সংশোধিত বাজেটে দুটি বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমিয়েছি। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫ থেকে ৭ শতাংশে তুলেছি। এই দুইটা মেজর জিনিস রেখেছি। টাকার অঙ্কে খুব বেশি হেরফের হবে না।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
রাজস্ব আহরণে দুর্বলতা ও রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানিগুলোর বকেয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা তাগাদা দিচ্ছি। কিন্তু ওদের অনেক রকম ফ্যাক্টর আছে। আমরা যে দামে পেট্রল কিনি, সেই দামে বিক্রি করতে পারছি না। দাম সমন্বয়ের পুরো স্বাধীনতাও দিইনি। তাই রাজস্ব আদায়ে কিছু চাপ তৈরি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। ট্যাক্স যেন ফাঁকি না যায়, লিকেজ যেন না হয়- সেদিকে বেশি নজর দিয়েছি। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে ট্যাক্সকে কার্যকর করার নির্দেশনার ওপরই।’
পে-স্কেল বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পে-কমিশনের কাজটা খুবই জটিল। ওরা স্বাধীনভাবে কাজ করছে, সেখানে আমাদের কোনো সরাসরি ভূমিকা নেই। তিনটি রিপোর্ট পাওয়ার পর সেগুলো রিকনসাইল করতে সময় লাগবে। আমাদের মেয়াদে এটা করা সম্ভব হবে কি না, কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা আমরাই ইনিশিয়েটিভ নিয়ে করেছি। আট বছর ওরা অপেক্ষা করতে পেরেছে, এখন ১২ মাসে আমরা চেষ্টা করছি। একটু ধৈর্য ধরতে হবে। রিপোর্টটা হাতে এলে আগামী সরকার গুরুত্বসহকারে নেবে।’ উপদেষ্টা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি একটা ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাব এবং রিপোর্টটা যদি আসে তখন আগামী সরকার খুব সিরিয়াসলি নিতে হবে। কারণ এই কাজটা করা হয়েছে স্বাধীনভাবে, অনেক চিন্তাভাবনা করে। অর্থের সংস্থান আছে, তবে বাজেটে শুধু পে-স্কেল নয়, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতেও ব্যয় আছে। সেগুলোকেও দেখতে হবে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
জাতিসংঘের রিপোর্টে খাদ্য সংকট ও শিশুর অপুষ্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একেবারে ‘হাঙ্গার’ অবস্থা নেই। পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি যেন খাদ্যে কোনো ঘাটতি না হয়। তিনি আরও জানান, পরশুদিন আমরা মিটিং করেছি। নিশ্চিত করেছি যেন যথেষ্ট খাদ্য মজুদ থাকে। নিরাপদ থাকতে ধান ও চালের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এতে স্টক বাড়বে, আবার কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।