মহিলাদলের সাবেক নেত্রীকে পেটানোর অভিযোগ জামায়াতকর্মীর বিরুদ্ধে
রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালি এলাকায় জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের সাবেক সভানেত্রী ও তার বোনকে প্রকাশ্যে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হরিয়ান ইউনিয়নের নলখোলা আশরাফের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জামায়াত কর্মী নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাটাখালি থানায় একটি জিডি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, কাটাখালি থানার নলখোলার বাসিন্দা বাবলু হোসেনের স্ত্রী ও হরিয়ান ইউনিয়ন মহিলাদলের সাবেক নেত্রী নিলুফার ইয়াসমিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আশরাফের মোড়ে কেনাকাটা করতে যান। সেখানে রনহাট গ্রামের জামায়াত কর্মী নুরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা হয় তার। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট নিয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় নুরুল ইসলাম নিলুফা ও তার বোন নুরবানুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। গালাগালি করতে নিষেধ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে নিজের পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে নুর বানুকে পেটান। এর প্রতিবাদ করলে নুরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হয়ে নিলুফার পেটে লাথি মারেন। পরে স্থানীয় লোকজন নিলুফা ও তার বোনকে উদ্ধার করে।
নিলুফা বলেন, ‘আমি আশরাফের মোড়ে গেলে নুরুল ইসলাম মিলন ভাই (রাজশাহী-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী) সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলে। আমি এর প্রতিবাদ জানালে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় আমাকে বসিয়ে রেখে আমার বোনকে ডাকতে বলে নুরুল। তারপর ফোনে আমার বোন নূর বানুকে ডাকি। এ ঘটনা শুনে আমার বোন প্রতিবাদ করলে পায়ের স্যান্ডেল খুলে তাকে পেটায় নুরুল। পরে আমাকেও লাথি মারে।’ এ ঘটনায় তারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত জামায়াত কর্মী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রী নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে নিলুফা গুজব ছড়িয়েছে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অনাকাঙ্ক্ষিত হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।’
এ বিষয়ে পবা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী হোসেন বলেন, ‘নিলুফা কখনো দলের কোনো পদে ছিল না। সে বাড়ি বাড়ি গৃহকর্মীর কাজ করে বেড়ায়। আর যে ঘটনা ঘটেছে, এটি রাজনৈতিক বিষয়ও নয়। তাদের ব্যক্তিগত বিরোধ। নিলুফা আগে মিজানুর রহমান মিনু ভাইয়ের গৃহকর্মী ছিল। পরে হরিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বাচ্চুর বাড়িতেও গৃহকর্মীও ছিল। বাচ্চু সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ ছিল। কাজেই এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী শফিকুল হক মিলন সাড়া দেননি।
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল দাবি করেন, নুরুল ইসলাম তাদের দলের কোনো পর্যায়ে নেতা নন। এমনকি তিনি জামাতের রোকনও নন। কাজেই বিষয়টি রাজনৈতিক নয়।
কাটাখালি থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, ‘নিলুফা কোনো নেত্রী নয়। তার সঙ্গে জামায়াত কর্মী নুরুল ইসলামের কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে নিলুফা ও তার বোন নুরবানুকে স্যান্ডেল পেটা করার বিষয়টিও নিশ্চিত নয়। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে নুর বানু থানায় একটি জিডি করেছেন। তদন্তের আবেদন জানিয়ে জিডিটি আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত আদেশ দিলে তদন্ত করা হবে।’
আমাদের সময়/জেএইচ