রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের সহায়তায় যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
১২ নভেম্বর ২০২৫, ২০:০৭
শেয়ার :
রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের সহায়তায় যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত

রোহিঙ্গা নারী ও কন্যা শিশুদের সহায়তায় যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জেনি চ্যাপম্যান।

মন্ত্রী চ্যাপম্যান বলেন, ‘একজন সত্যিকারের অংশীদার হিসেবে যুক্তরাজ্য গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা কিংবা অনিয়মিত অভিবাসনরোধে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা উভয় দেশের জন্য বাস্তব ও ইতিবাচক ফলাফল আনছে।’

১৩ থেকে ১৪ নভেম্বরের এই সফরে তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় চলমান যুক্তরাজ্য-অর্থায়িত প্রকল্পসমূহ পরিদর্শন করবেন এবং নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গৃহীত উদ্যোগগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।

সফরকালে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। যার মধ্যে রয়েছেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধে সহযোগিতা বাড়াতে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকেও অংশ নেবেন তিনি।

সম্প্রতি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তার জন্য ২৭ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের নতুন সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এই তহবিলের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ লাখ শরণার্থীর জন্য খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ পানি ও জীবনরক্ষাকারী সেবা প্রদান করা হবে।

২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা প্রদান করছে, যার মোট পরিমাণ ইতোমধ্যে ৪৪৭ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘এই সফর যুক্তরাজ্যের আধুনিক ও পারস্পরিকভাবে উপকারী উন্নয়ন অংশীদারিত্বের প্রতি অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।’

রোহিঙ্গা ইস্যুর পাশাপাশি মন্ত্রী চ্যাপম্যান তার সফরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নতুন সহায়তার ঘোষণা দেবেন। এশিয়া ও আফ্রিকার ১২টি দেশ ও অঞ্চলে ‘রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড অ্যাডাপটেশন ফান্ড’-এর আওতায় ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দেওয়া হবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ পাবে ৪ মিলিয়ন পাউন্ড। এই সহায়তার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীল কৃষি কৌশল, মৌসুমি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ এবং খাদ্যনিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

যুক্তরাজ্যের এই সফরটি শুধু রোহিঙ্গা সংকট নয় বরং জলবায়ু অভিযোজন ও অভিবাসনসহ বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারত্বকে আরও গভীর করার এক সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সহায়তা এবং রাজনৈতিক সংলাপ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আমাদের সময়/এফএম