পুতুলের মনোনয়ন বাতিল দাবি, মাঠে টিপু-রাজন সমর্থকরা

নাটোর প্রতিনিধি
১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০০
শেয়ার :
পুতুলের মনোনয়ন বাতিল দাবি, মাঠে টিপু-রাজন সমর্থকরা

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন মানেই ছিল ধানের শীষের বিজয়। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত এ আসন বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এ সময়ে পরপর চারবার এমপি নির্বাচিত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) সাবেক ভিপি ফজলুর রহমান পটল। এরই মাঝে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপুও এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেন। কেন্দ্রীয় রাজনীতির পাশাপাশি ধীরে ধীরে এলাকার রাজনীতিতে টিপু সক্রিয় হলে তাঁর অনুসারী সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পটল ও টিপু উভয়ের মাঝে যোগাযোগও ছিল বেশ ভালো।

২০১৬ সালে ফজলুর রহমান পটল মারা গেলে সেই থেকে নাটোর-১ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে থাকেন টিপু। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন দেওয়া হয় ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরীনকে। বাবার মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক ভিপি ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন সক্রিয় হন। ভাইয়ের সঙ্গে ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলও মাঝে মাঝে এলাকায় গিয়ে একই মঞ্চে বক্তব্য দেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ফজলুর রহমান পটরের মৃত্যুর পর এলাকার নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এক ভাগ বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর অনুসারী; অপর অংশ পটল পরিবারের অনুসারী। সেখানেও এখন দুই ভাগ। এক ভাগ নাটোর জেলা বিএনপির সদ্য যুগ্ম আহ্বায়ক পুতুলের; অপর ভাগ জেলার সদস্য রাজনের।

গত ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে একক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হলে সেখানে ফারজানা শারমিন পুতুলের নাম উঠে আসে। তাৎক্ষনিকভাবে টিপু ও রাজন সমর্থকরা পতুলের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। টিপুর মনোনয়ন দাবিতে রেল লাইনে শুয়ে পড়েন তাঁর অনুসারীরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, মাঠপর্যয়ে জনগণের সঙ্গে যার সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং জনগণ যাকে চাইবেন তিনিই যোগ্য। আমি এলাকার মানুষ হিসেবে তাই চাই, যেটা জনগণ চান। জনগণের চাওয়া প্রতিফলন না হলে নির্বাচনে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

রাজন ও টিপু অনুসারীদের ভাষ্য, পুতুলের শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুর। তাঁকে মনোনয়ন দিলে সেখানে দেওয়া হোক। এ ছাড়াও নারী হিসেবে পুতুলকে সংরক্ষিত কোটায় এমপি বানানো সম্ভব। বিএনপির ত্রিমুখী লড়াই হলে এই আসন জামায়াতের হয়ে যেতে পারে।

নাটোর-১ আসনে ধানের শীষ প্রার্থী ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, এ আসন নিয়ে বরাবরই বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র চলে। আমার বড় ভাই এবং আমি দুজনে রাজনৈতিক মাঠে কাজ করেছি। দল যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই মনোনয়ন দেবে। আমাদের চাওয়া ছিল, আমাদের পরিবারের মধ্য যেন মনোনয়নটা থাকে।

ইয়াসির আরশাদ রাজনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁর নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, দল থেকে যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করবে। কেউ যদি দলের নির্দেশ পালন না করে, দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।