হিন্দু যুবকের সঙ্গে মুসলিম তরুণীর বিয়ে ঘিরে ফরিদপুরে উত্তেজনা
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় হিন্দু যুবক ও মুসলিম তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক এবং হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভাব্য সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতে সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই যুবক ও তরুণীকে হেফাজতে নিয়েছে সদরপুর থানাপুলিশ।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর ) ছেলেটিকে ফরিদপুর কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে বলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান রিপন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সতেররশি গ্রামের হরিজন সম্প্রদায়ের পাচু চন্দ্র ঋষির ছেলে কার্তিক চন্দ্র ঋষির (২৩) সঙ্গে একই উপজেলার নয়রশি গ্রামের আইয়ুব আলী শরীফের মেয়ে মারিয়া আক্তারের (১৯) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত ৩১ অক্টোবর কার্তিক ও মারিয়া বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। বহু খোঁজাখুঁজির পর সোমবার তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হলে স্থানীয়দের চাপে সদরপুর ইউনিয়নের নয়রশি গ্রামে সন্ধ্যা ৭টায় একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সালিশে উপস্থিতদের সামনে তরুণী মারিয়া প্রকাশ্যে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ এবং হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কার্তিককে বিয়ে করার কথা স্বীকার করেন।
মেয়েটির এই স্বীকারোক্তির পরপরই উপস্থিত স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দেয়। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও সংঘর্ষ এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় সদরপুর থানা পুলিশ।
উপস্থিত উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সামাল দিতে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্তিক ও মারিয়াকে পুলিশি হেফাজতে নেয়।
এ প্রসঙ্গে সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘ছেলে ও মেয়ে উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক। গতকাল তাদের নিয়ে সালিশ চলাকালে উপস্থিতদের মধ্যে উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই এবং দুই জনকেই হেফাজতে আনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর ) ছেলেটিকে ফরিদপুর কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে। আর মেয়েটি তার পরিবারের জিম্মায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে, তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
প্রেম, ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে এবং এরপর সালিশকে ঘিরে সৃষ্ট এই উত্তেজনা বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে।
আমাদের সময়/আরডি