জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণভোট ছাড়া নির্বাচন নয়: মামুনুল হক
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণভোট ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে চাই, জুলাই বিপ্লবে শাহাদতবরণকারী বীর শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে জুলাই বিপ্লবের জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট ছাড়া বাংলার মাটিতে আমরা আর কোনো কিছুই হতে দেব না।’
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে পাঁছ দাবিতে ৮টি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘অনতিবিলম্বে জুলাই সনদকে সরকারি আদেশের মাধ্যমে এর প্রাথমিক আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে জুলাই বিপ্লবপন্থিরা বরদাশত করা হবে না।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
গণভোট ছাড়া বাংলার মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদকে আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা হিসেবে নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। যারা জুলাই সনদের গণভোট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করছেন—আমরা তাদের সমস্যার কথা জানতে চাই। কোনো যুক্তি নেই। তারা জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে ঠেকিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করার ষড়যন্ত্র করছে।’
তিনি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার ঘোষণা দিচ্ছি, রক্ত দিয়ে যেই ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি—প্রয়োজনে আবারও রক্তের সাগর প্রবাহিত হবে। বাংলার মাটিতে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না।’
মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একদল ৭২-এর বাকশালপন্থি, অন্য দল ২৪-এর জুলাইপন্থি। ২৪-এর পরাজিত শক্তিরা ১৩ নভেম্বর যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। বাকশালপন্থিদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে জুলাইপন্থিরা। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং পক্ষের কাছে আমার সুস্পষ্ট জিজ্ঞাসা, সবাই যার যার অবস্থান পরিষ্কার করুন। হয় আপনি জুলাই বিপ্লবের পক্ষে, আর না হয় আপনি বাহাত্তরের বাকশালপন্থি।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
জুলাইয়ের চেতনা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যারা নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না, তারা বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়। আমরা রক্ত দিয়ে বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা এনেছি, রক্ত দিয়েই স্বাধীনতা রক্ষা করবো। আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু জুলাইয়ের চেতনা সমুন্নত রাখতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
আগামী ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মামুনুল হক বলেছেন, ‘বাহাত্তরের পরাজিত বাকশালপন্থিরা আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লকডাউনের নামে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ১৩ নভেম্বর কোনো বাকশালপন্থিকে বাংলার রাজপথে নামতে দেবো না। যদি কেউ নামার অপচেষ্টা চালায় আমরা তাদের রাজপথে মোকাবিলা করবো, ইনশাআল্লাহ।’
জনগণ ও আট দলর ভাষা বুঝতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ‘সরকার যদি আট দলের নেতাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান বুঝতে অক্ষম হয়, তবে যে ভাষায় তারা কথা বুঝবে, সেই ভাষাতেই বলা হবে।’
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।
আমাদের সময়/এফএম
