থেমে গেল গাজীপুর-৬ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচারণা
উচ্চ আদালত বাগেরহাটের ৪টি সংসদীয় আসন সোমবার (১০ নভেম্বর) বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়ায় ওই এলাকার মানুষ খুশি হলেও থেমে গেছে গাজীপুর-৬ আসনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণা। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন গাজীপুরের টঙ্গীর সাধারণ জনগন। আদালতের ওই আদেশের কারণে ভেস্তে গেছে নতুন সংসদীয় গাজীপুর-৬ আসন।
জানা গেছে, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক ডজনের বেশি প্রার্থী নতুন ওই আসনে প্রার্থী হতে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
গাজীপুর-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আদালতের ওই আদেশে আমরা টঙ্গী এলাকার মানুষ চরমভাবে অখুশি হয়েছি। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আইনি লড়াই করব।’
একই আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আদালতের আদেশে দেশের প্রায় সব আসনের সীমানা নিয়ে ইসির ঘোষিত প্রজ্ঞাপন স্থগিত হয়ে গেছে। আদালতের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) চেম্বার জজ আদালতে আপিল করা হবে। রায়ে টঙ্গীর সাধারণ মানুষেরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ।’
এ বিষয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল থেকেই টঙ্গী এলাকার মানুষের দৃষ্টি ছিল উচ্চ আদালতের দিকে। আদালতের ওই আদেশে টঙ্গীর মানুষ চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব।’
বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী মনোনীত গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান জানান, টঙ্গী, গাছা এবং পূবাইলের সাধারণ জনগণের প্রাণের দাবি হচ্ছে গাজীপুর-৬ আসন। আমরা জনগণের এই দাবি বাস্তবায়নে লড়াই এবং আইনি পদক্ষেপ চালিয়ে যাব। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে বর্তমানে আদালত প্রাঙ্গণে রয়েছি।’
এদিকে সোমবার সারাদিন গাজীপুর -৬ আসনের রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টি ছিল হাইকোর্টের রায়ের দিকে। গাজীপুর-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই সকাল থেকেই হাইকোর্টে অবস্থান করেছেন।
তবে, রায়ের পর টঙ্গীতে যে নির্বাচনী আমেজ ছিল, তা থমকে যায়।
অনেকে প্রশ্ন রাখেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে গাজীপুরের সংসদীয় আসনগুলোর সীমানা কি আবার নতুন করে নির্ধারণ হবে, নাকি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা অনুযায়ী ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই সকল প্রশ্ন গাজীপুর সংসদীয় আসনে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের ৪টি আসন থেকে একটি কমিয়ে ৩টি এবং গাজীপুরের ৫টি থেকে মহানগরীর টঙ্গী শিল্প এলাকা (৩২ থেকে ৩৯ এবং ৪৩ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড) নিয়ে নতুন করে গাজীপুর-৬ আসন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এরপর গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন একাধিক পক্ষ। সোমবার (১০ নভেম্বর) রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাগেরহাটের ৪টি আসন থেকে একটি কমিয়ে ৩টি আসন করার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জেলার ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ আদেশের কারণে আটকে গেছে নতুন ঘোষিত গাজীপুর-৬ আসন।
আমাদের সময়/আরআর