অস্ট্রেলিয়ার রেইনফরেস্ট কার্বন বেশি ছাড়ছে

আমাদের সময় ডেস্ক
১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫২
শেয়ার :
অস্ট্রেলিয়ার রেইনফরেস্ট কার্বন বেশি ছাড়ছে

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনভূমি বা রেইনফরেস্টগুলো সাধারণত কার্বন শোষণ করে পৃথিবীকে শীতল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার রেইনফরেস্টগুলো উল্টো কাজ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব রেইনফরেস্ট প্রকৃতি থেকে কার্বন শোষণের পরিবর্তে, বেশি পরিমাণ কার্বন নির্গমন করছে। বিষয়টি বিজ্ঞানীদের চিন্তায় ফেলেছে।

গবেষকদের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিষয়টি ভবিষ্যতে কার্বন শোষণের জন্য বনাঞ্চলের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে ফেলবে। সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ‘নেচারে’ প্রকাশিত ওই গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইনফরেস্টের প্রায় ১১ হাজার গাছের ওপর চালানো প্রায় ৫০ বছরের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, প্রায় ২৫ বছর আগে এই পরিবর্তন শুরু হয়েছে।

সাধারণত মৃত গাছগুলো যখন পচতে শুরু করে তখন সঞ্চিত কার্বন পুনরায় বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে। এই হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার এই রেইনফরেস্টগুলোতে আগের তুলনায় অনেক বেশি গাছপালা মারা যাচ্ছে। এই বিষয়টিও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এ সংক্রান্ত নিবন্ধে বলা বলা হয়েছে, ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এই বনাঞ্চল প্রতি বছর একরপ্রতি গড়ে প্রায় ৫৫৩ পাউন্ড কার্বন শোষণ করত। কিন্তু ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেখানে প্রতি বছর একরপ্রতি গড়ে ৮৩০ পাউন্ড কার্বন বাতাসে নির্গমন করেছে। এমন উদাহরণ বিশ্বে এটিই প্রথম।

নেচারে প্রকাশিত নিবন্ধের প্রধান লেখক ড. হান্না কার্ল বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইডের কিছু অংশ শোষণ করে বনাঞ্চলগুলো। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর দিক অনেকটা রোধ করে। কিন্তু আমাদের নতুন গবেষণা বলছে, এই ধারণা অনেকটা হুমকির মুখে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোয় গাছের মৃত্যুর হার বেড়েছেÑ এর পেছনে প্রধান কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্চ তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডলী শুষ্কতা এবং খরা।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ২০টি বন থেকে ৪৯ বছরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর তীব্রতায় আরও বেশি গাছ মারা যাচ্ছে এবং নতুন গাছ জন্মানো কঠিন হয়েছে। জ্যেষ্ঠ লেখক প্যাট্রিক মেয়ারও গবেষণার ফলাফলকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন।