ফের যুদ্ধ শুরুর আতঙ্কে ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনিরা ভয় পাচ্ছেন, যুদ্ধ যে কোনো মুহূর্তে আবার শুরু হতে পারে। কারণ গাজার আকাশে এখনও ইসরায়েলি ড্রোন উড়ছে। কয়েকজন ফিলিস্তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী হলুদ রেখার বাইরের অঞ্চলগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো অব্যাহত রাখায় আমরা অবিরাম বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।’ ফলে আগ্রাসী ইসরায়েল যে কোনো সময় আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে বলে তাদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
গাজায় এক হামলায় ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিসের পূর্বে বনি সুহেইলাতে একজন ফিলিস্তিনি যেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেই তাঁবুতে আঘাত হানে। সেখানে বসবাসকারী লোকেরা জানান, লক্ষ্যবস্তু করা স্থানটি ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণের অধীনে থাকা অঞ্চল চিহ্নিতকারী হলুদ রেখার মধ্যে ছিল না।
যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ২৪১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে হলুদ রেখা অতিক্রম করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এভাবেই ইসরায়েলি বাহিনী এই মানুষদের হত্যার কারণ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এদিকে আল জাজিরা দুটি ভিডিও যাচাই করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভেঙে দিচ্ছে ও জব্দ করছে। একটি ভিডিও ক্লিপে, যা সালফিতের পশ্চিমে অবস্থিত ব্রুকিন শহরে ধারণ করা হয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি যন্ত্রপাতিকে বন্দি মাহের জোহাইরের বাড়িটি ভেঙে দিতে দেখা যায়। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি সৈন্যের উপস্থিতিতে সৈন্যরা একটি সামরিক বুলডোজার দিয়ে বাড়িটিতে অভিযান চালায় ও পরে সেটি ভেঙে দেয়।
দ্বিতীয় ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদের দক্ষিণে অবস্থিত সিলওয়ানে। এতে দেখা যায়, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সম্পত্তিটি জব্দ করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি বাড়িটির ভেতরের জিনিসপত্র বের করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
অন্যদিকে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফরিদা শহীদ অভিযোগ করেছেন, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে শিক্ষাব্যবস্থার পতন ঘটছে। এটি হলো শিক্ষামূলক অবকাঠামোর ইচ্ছাকৃত ধ্বংস বা শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের লক্ষ্যবস্তু করা। তিনি বলেছেন, বর্তমানে ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু গাজায় স্কুলের বাইরে রয়েছে। আনুমানিক ৮১৫টি স্কুলের মধ্যে ৯৭ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
আল জাজিরাকে ফরিদা শহীদ জানান, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ গাজার শিক্ষাব্যবস্থার ‘সম্পূর্ণ, ইচ্ছাকৃত ও পদ্ধতিগত ধ্বংস’।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
শহীদ আরও বলেন, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত এবং বৃহৎ সংখ্যক স্কুল পরিচালনাকারী জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে আবার চালু করলে শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো যেতে পারে। শহীদ যোগ করেন, ‘ফিলিস্তিনে শিশু ও শিক্ষাবিদরা কী বলছেন, সেটাও আমাদের শোনা দরকার।’