ইসরায়েলের ভূগর্ভে নরকের ঘর

আমাদের সময় ডেস্ক
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮
শেয়ার :
ইসরায়েলের ভূগর্ভে নরকের ঘর

ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর ইসরায়েলের অকথ্য নির্যাতনের কথা আগেই জেনেছে বিশ^। এবার এলো আরও ভয়াবহ তথ্য। ইসরায়েলের অভ্যন্তরে রয়েছে ভূগর্ভস্ত কারাগার। ঠিক যেন নরক। সেখানে প্রবেশ করে না সূর্যের আলো। নির্দোষ ফিলিস্তিনি বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তাদের রাখা হতো সেখানেই। বন্দিদের প্রয়োজনীয় খাবার ও পানিটুকুও দেওয়া হয় না। ইসরায়েলের নির্যাতনবিরোধী পাবলিক কমিটি (পিএসটিআই) এমন তথ্য জানিয়েছে। খবর গার্ডিয়ানের।

আটককৃতদের মধ্যে অন্তত দুইজন বেসামরিক ফিলিস্তিনি রয়েছেন, যাঁদের কয়েক মাস ধরে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক রাখা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন ৩৪ বছর বয়সী সেবিকা রয়েছেন, অপরজন তরুণ ব্যবসায়ী। এই দুইজনকে ভূগর্ভস্থ রাকেফেট কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে তাঁদের নিয়মিত মারধর এবং কৌশলগত নির্যাতন করা হতো। সেপ্টেম্বর মাসে পিসিএটিআই’র আইনজীবী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে একটি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় ওই সেবিকাকে আটক আটক করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, রাকেফেট কারাগারটি ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক সংঘবদ্ধ অপরাধীদের রাখার জন্য খোলা হয়েছিল কিন্তু কয়েক বছর পর এটি অমানবিক বলে মনে করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর অতি-ডানপন্থি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এটিকে পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে আদালতে দোষী সাব্যস্ত ২৫০ ফিলিস্তিনি বন্দি এবং গাজা থেকে আটক ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। রাকেফেটে আটক তরুণ ব্যবসায়ীও সেই মুক্তিপ্রাপ্তদের একজন।

পিসিএটিআই’র নির্বাহী পরিচালক তাল স্টেইনার বলেছেন, সব কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য ছিল ‘ভয়াবহ’। বর্তমান ও সাবেক বন্দিদের ওপর ইসরায়েলের নির্যাতন পদ্ধতি ছিল আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তবে রাকেফেটে নির্যাতন ছিল আরও ভিন্ন ধরনের। তাঁদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্ট করা হয়। দিনের আলো ছাড়া মাসের পর মাস কাটাতে হয়। ঘুমাতে দেওয়া হয় না।

এদিকে সম্প্রতি বিধ্বস্ত গাজায় প্রবেশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিনিধিরা। তাঁরা জানিয়েছেন, দুই বছর ইসরায়েল যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা যে কোনো কল্পনাকেও হার মানায়। বিবিসি জানিয়েছে, দৃষ্টি যতদূর যায় সবটাই ধ্বংসস্তূপ। বেইত হানুন থেকে অন্যপ্রান্ত গাজা সিটি পর্যন্ত বিস্তৃত এক সমতল ধূসর মরুভূমির মতো। একেবারেই বোঝার উপায় নেই- কোথায় জনবসতি ছিল। বিবিসির প্রতিনিধিদের গাজা পরিদর্শনও ছিল বেশ নিয়ন্ত্রিত। সাংবাদিকরা কোনো ফিলিস্তিনির সঙ্গে দেখা বা কথা বলার অনুমতি পাননি। এমনকী ইসরায়েলের সামরিক সেন্সরশিপ আইন অনুযায়ী, প্রকাশের আগে সামরিক কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদনটি পর্যালোচনাও করেছেন।